পহেলগাঁওয়ের নৃশংস জঙ্গি হামলায় যখন কেঁপে উঠেছিল দেশ, তখনই স্পষ্ট ছিল—এর জবাব ভারত দেবে। আর সেই জবাবই এল ৭ মে গভীর রাতে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শুরু হল ‘অপারেশন সিঁদুর’, যার মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ছড়িয়ে থাকা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করা।
জইশ, লস্কর, হিজবুল— লক্ষ্যবস্তু
এই অভিযানে বিশেষভাবে নিশানা করা হয় জইশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা ও হিজবুল মুজাহিদিন-এর ঘাঁটিগুলোকে, যাদের বিরুদ্ধে ভারতের ভূখণ্ডে একাধিক সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ রয়েছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ছিল বাহাওলপুর, যেখানে জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান ঘাঁটি অবস্থিত। এই জায়গাটিতেই পুলওয়ামা হামলার পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ চলেছিল বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে। সেনা সূত্রের দাবি, এখানে প্রায় ২৫০ জন জঙ্গি একসঙ্গে ছিল অভিযানের সময়।
লস্করের শক্ত ঘাঁটি মুরিদকে এবং হিজবুলের লঞ্চিং প্যাডেও আঘাত
লস্কর-ই-তৈবার অন্যতম শক্ত ঘাঁটি মুরিদকে—যেখানে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের প্রক্রিয়া চলত, তাও ধ্বংস করা হয়েছে। পাশাপাশি, শিয়ালকোট অঞ্চলে থাকা হিজবুল মুজাহিদিনের লঞ্চিং প্যাড, যেখানে আইএসআই সরাসরি সাহায্য করছিল বলে দাবি, তাও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ধ্বংস হয়েছে আরও ছয়টি সন্ত্রাসী ক্যাম্প
এই অভিযানে ধ্বংস হয় ভিমবার, কোটলি সহ মোট ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি। এইসব জায়গায় লস্কর ও জইশের বহু সদস্য সক্রিয় ছিল। সূত্র বলছে, পুরো অভিযানের সময় প্রায় ৩০০-র বেশি জঙ্গি উপস্থিত ছিল বিভিন্ন ক্যাম্পে।
ভারতের স্পষ্ট বার্তা: সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কোনও রকম ছাড় নয়
‘অপারেশন সিঁদুর’ শুধু একটি সেনা অভিযান নয়, বরং এটি ছিল ভারতের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদ ও তার পৃষ্ঠপোষকদের উদ্দেশে একটি জোরালো বার্তা—“হামলা হলে জবাব হবে নির্মম”। এই অভিযানের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হল, দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় ভারত কখনও পিছু হটবে না।