কাশ্মীরের পহেলগাঁও। শান্ত পাহাড়, নির্জন উপত্যকা, আর পর্যটকেরা তখনও ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিশ্চিন্তে। কিন্তু ঠিক ছ’দিন পরে সেই জায়গাতেই ঘটে যায় ভয়াবহ জঙ্গিহানা। ২৬ জনের মৃত্যু—যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন নিরীহ পর্যটক। আর এই ঘটনার ছায়াতেই ধরা পড়লেন এক আধাসেনা জওয়ান, যিনি অভিযুক্ত পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে।
পাক চর হিসেবে ধৃত CRPF-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর
ধৃতের নাম মতিরাম জাট। তিনি ছিলেন সিআরপিএফ-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর পদে। কর্মরত ছিলেন বাহিনীর ১১৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নে। সূত্র অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল তাঁকে পহেলগাঁও থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়। আর ২২ এপ্রিলই ঘটে যায় ভয়াবহ হামলা।
এনআইএ সূত্রে খবর, মতিরাম বহুদিন ধরেই পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। তিনি নিয়মিত ভারতীয় বাহিনীর গোপন তথ্য পাচার করতেন পাকিস্তানের হাতে। তার বদলে পাক গোয়েন্দাদের থেকে মোটা টাকা পেতেন বলে অভিযোগ।
শুধু দেশের নিরাপত্তা নয়, বিদেশি পর্যটকদের জীবনও বিপন্ন
দিল্লি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং আদালতে হাজির করা হলে আদালত ১৫ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, “এই অভিযোগ শুধু দেশের জন্যই বিপজ্জনক নয়, বরং ভারতে আগত বিদেশি পর্যটকদের জীবনকেও চরম বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। এই বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি।”
অপারেশন সিঁদুর-এর পর একের পর এক গ্রেফতার
এই একটি ঘটনায় থেমে নেই এনআইএ। পহেলগাঁও হামলার পর ও ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন একাধিক ব্যক্তিকে পাক গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ—তালিকায় একাধিক রাজ্যের নাম। এমনকি তদন্তে উঠে এসেছে এক সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার জ্যোতি মলহোত্রার নামও।
নতুন মোড় নিচ্ছে তদন্ত, উঠে আসছে আরও বিস্ফোরক তথ্য
মতিরাম জাটের গ্রেফতারি গোটা চক্রের বিরুদ্ধে তদন্তে নতুন দিক খুলে দিচ্ছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, এই জওয়ানের মাধ্যমে পাকিস্তানি সংস্থাগুলি ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোতায়েন, রুটিন ও অস্ত্রভাণ্ডারের তথ্য পেয়ে যেত।