India US Trade Deal : বিশ্ব অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে ফের একবার নজর কেড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস থেকে সোজাসুজি ঘোষণা করে জানিয়েছেন, চিনের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতকেও নিয়ে দিয়েছেন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা—”আরও বড় কিছু আসছে!”
চিন-মার্কিন চুক্তির ফোকাস রেয়ার-আর্থ
সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া যুক্তরাষ্ট্র-চিন বাণিজ্যচুক্তির মূল আকর্ষণ হল রেয়ার-আর্থ উপাদান ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ। এই চুক্তির আওতায় চিন ফের আমেরিকায় রেয়ার-আর্থ ও ম্যাগনেট রফতানিতে সম্মতি দিয়েছে। পাল্টা আমেরিকা কিছু শুল্ক-সংক্রান্ত শিথিলতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি শিল্পে ব্যবহৃত রেয়ার-আর্থ খনিজের জোগানে এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। সম্প্রতি গ্লোবাল সাপ্লাই চেন বিপর্যয়ের পর এই চুক্তিকে ‘কৌশলগত সাফল্য’ বলেই ব্যাখ্যা করছেন রাজনৈতিক মহল।
“ইন্ডিয়া ডিল উইল বি ভেরি বিগ”—ট্রাম্পের বার্তা
চিনের সঙ্গে এই চুক্তি ঘোষণার পরই, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত প্রসঙ্গে বলেন, “ইন্ডিয়া ডিল উইল বি ভেরি বিগ।” তিনি ইঙ্গিত দেন, ভারতের সঙ্গে আরও বড় পরিসরের এক বাণিজ্যচুক্তি দ্রুত সম্পন্ন হতে পারে।
ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে পুরোদমে
মার্কিন বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে এবং শীঘ্রই একটি বোঝাপড়ায় পৌঁছানো সম্ভব। আলোচনার লক্ষ্য—দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রসার এবং কিছু বিদ্যমান শুল্ক নিয়ে সমঝোতা। এই আলোচনার জন্য ৯ জুলাই নির্ধারিত হয়েছে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা। কারণ, এই দিনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভারতের কিছু পণ্যের উপর ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’-এর কার্যকারিতা শুরু হওয়ার কথা।
ভারতের রক্ষণশীলতা ও লক্ষ্য
ভারত, যদিও সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে উন্মুখ, তবুও কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে রক্ষণশীল অবস্থান বজায় রেখেছে। বিশেষত কৃষি ও গাড়ি-উপাদান সংক্রান্ত খাতে দেশীয় শিল্প রক্ষার লক্ষ্যে ভারত কিছু শর্ত মানতে আপত্তি জানিয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে দেওয়া। সেই লক্ষ্য মাথায় রেখে সামগ্রিকভাবে ভারত আলোচনার রাস্তাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।
ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি
বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন-চিন ও মার্কিন-ভারত চুক্তি দুটোই বর্তমান বৈশ্বিক বাণিজ্য কাঠামোয় বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। বিশেষ করে আমেরিকার নির্বাচনের আগমুহূর্তে এই চুক্তিগুলির রাজনৈতিক গুরুত্বও অস্বীকার করা যায় না। ট্রাম্পের কূটনৈতিক আগ্রাসনের জেরে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করছে, তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-রাজনীতির ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।