বিশাখাপত্তনমের সমুদ্রতট যেন এক যোগময় পবিত্র ভূমি। ২০২৫-এর আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে সেই ছবিই ধরা পড়ল ভোরবেলায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আয়োজিত হল এক ঐতিহাসিক যোগ অনুশীলন—যেখানে স্থলভাগ তো বটেই, যোগের আসন পাতা হল জলেও। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজে দাঁড়িয়ে যোগ করলেন নৌসেনার সাহসী যোদ্ধারাও।
সমুদ্রতট জুড়ে ৩০ কিমি লম্বা ‘যোগপথ’
বিশাখাপত্তনমের আর কে বিচ (RK Beach)-এর ৩০ কিমি দীর্ঘ তটরেখাজুড়ে সাজানো হয়েছিল বিশাল যোগমঞ্চ। সকাল সকাল প্রায় ১১ হাজার নৌসেনা এবং তাঁদের পরিবার—সবাই যোগ দিয়েছিলেন এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে। গোটা তটজুড়ে তৈরি হয়েছিল ১০টি আলাদা ‘এনক্লোজার’—যাতে সকলেই নিজেদের স্থানে থেকে যোগচর্চায় অংশ নিতে পারেন শান্তিতে। প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজে ছিলেন এই আয়োজনের মুখ্য মুখ। তাঁকে সামনে রেখে সকলে একসঙ্গে শুরু করেন প্রাণায়াম ও বিভিন্ন আসনের চর্চা। অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল—যোগকে জীবনধারার অঙ্গ করে তোলা, এবং তরুণ প্রজন্মকে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার দিক নির্দেশ দেওয়া।
সমুদ্রের বুকেও যোগচর্চা
এই আয়োজনের সবচেয়ে নজরকাড়া দিক ছিল সমুদ্রের ওপর দাঁড়ানো যুদ্ধজাহাজে যোগচর্চা। বিশাখাপত্তনম উপকূলের কাছে ভাসমান অবস্থায় থাকা একাধিক ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজে কর্মরত নৌসেনারাও একযোগে অংশ নেন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে। প্রশান্ত সমুদ্রের বুকে দাঁড়িয়ে তাঁদের যোগচর্চা রীতিমতো আবেগঘন দৃশ্য তৈরি করে।
প্রতিরক্ষা শক্তির সঙ্গে যোগের সংযোগ
ভারতীয় নৌবাহিনীর ‘Eastern Naval Command’-এর এই উদ্যোগ ছিল প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিকে ঘিরে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। শুধু শরীর নয়, মন ও চেতনার দৃঢ়তাও যে সেনাবাহিনীর শক্তি, তা আরও একবার মনে করিয়ে দিল এই সমাবেশ। নৌসেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে যুক্ত কর্মীদের মানসিক স্থিতি এবং ধৈর্য বাড়ানোর অন্যতম মাধ্যম হতে পারে নিয়মিত যোগচর্চা। সেই বার্তাই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে গোটা জাতির কাছে।
ভারত থেকে বিশ্বমঞ্চে যোগের বার্তা
যোগ দিবস ২০২৫-এ ভারতের এই ঐতিহাসিক অংশগ্রহণের দৃশ্য আন্তর্জাতিক পরিসরেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। একদিকে প্রধানমন্ত্রী, অন্যদিকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর যৌথ অংশগ্রহণ—ভারত যে যোগকে কেবল সংস্কার নয়, শক্তির প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে, তা স্পষ্ট।