Damascus Attack : প্রার্থনার সময় গির্জার ভিতরই ঘটে গেল বিভীষিকা। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে এক আত্মঘাতী বোমা ও গুলির হামলায় কেঁপে উঠল ডুইলা এলাকার মার এলিয়াস গির্জা। অন্তত ২০–২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আহতের সংখ্যা ৫২ থেকে ৬৩।
প্রার্থনার মুহূর্তেই বিভীষিকা
২২ জুন সন্ধ্যায় যখন গির্জার ভিতর চলছে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা, ঠিক তখনই ঢুকে পড়ে এক বন্দুকধারী। প্রথমে নির্বিচারে গুলি চালানো হয় উপস্থিত জনতার উপর। তার পরই ঘটে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেন উপস্থিত অনেকে, কিন্তু কয়েক সেকেন্ডেই ভেঙে পড়ে গির্জার অভ্যন্তর। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীর পরনে ছিল বিস্ফোরকভর্তি বেল্ট। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে, বিস্ফোরণটি ছিল ‘সুইসাইড বম্বিং’।
সরকার জানাল দায়ী ইসলামিক স্টেট
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই হামলার পিছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন Islamic State। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী সরাসরি হামলার দায় স্বীকার করেনি। সিরিয়া সরকার মনে করছে, এই হামলা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভয় দেখানোই ছিল মূল লক্ষ্য।
প্রথম আত্মঘাতী হামলা, তীব্র প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক মহলে
দামেস্ক শহরে এই ধরনের গির্জা-কেন্দ্রিক আত্মঘাতী হামলা এই প্রথম। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংগঠন ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এই হামলার নিন্দা করেছেন। জাতিসংঘের এক মুখপাত্র বলেন, “ধর্মীয় স্থানে এমন বর্বরোচিত হামলা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।”
ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
মার এলিয়াস গির্জা শহরের একটি পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ গ্রিক অর্থোডক্স উপাসনালয়। হামলার সময় সেখানে বহু মহিলা ও শিশু উপস্থিত ছিলেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক ধর্মযাজক ও সাধারণ নাগরিক। এই হামলার পর প্রশ্ন উঠেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে। ধর্মীয় সম্প্রীতির ভিত যে এখনও কতটা দুর্বল, এই হামলা সেই বিষয়েই স্পষ্ট বার্তা দিয়ে গেল বলে মত বিশ্লেষকদের। ঘটনার পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। চলছে ফরেনসিক তদন্ত ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ। শহরের অন্যান্য গির্জা ও উপাসনালয়গুলিতেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহায়তায় যৌথ তদন্তের কথাও ভাবছে সিরিয়া প্রশাসন।