পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাব দিতে গিয়ে ভারত এমন এক সামরিক অভিযানের পথে হাঁটল, যা একদিকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিল, অন্যদিকে বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চেও ভারতের অবস্থান জোরালো করল। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরপরই পাকিস্তান নিজেই ফোন করে সংঘর্ষবিরতির অনুরোধ জানায়।
তিন লক্ষ্যপূরণ—সামরিক, রাজনৈতিক, মনস্তাত্ত্বিক
সরকারি সূত্র বলছে, অপারেশন সিঁদুরের মূল উদ্দেশ্য ছিল তিনটি—
১. সামরিকভাবে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করা,
২. রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তান ও আন্তর্জাতিক মহলে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া,
৩. মনস্তাত্ত্বিকভাবে পাকিস্তানের ভিতর ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া।
ভারতের আঘাতে বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, মুজফ্ফরাবাদের জঙ্গি ঘাঁটি ধূলিসাৎ হয়েছে। ১০০-র বেশি সন্ত্রাসবাদী নিহত। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ইউসুফ আজহার, মুদাস্সির আহমেদের মতো কুখ্যাত জঙ্গিরা।
পাকিস্তানের ঘাঁটিতে ঢুকে ‘ঘরে ঢুকে মারার’ বার্তা
ভারত এ বার শুধু সীমান্ত পেরিয়ে নয়, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বাইরেও হামলা চালিয়েছে। সারগোদা বায়ুসেনা ঘাঁটির মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ভারত আক্রমণ করেছে। পাকিস্তানের আধুনিক বিমানধ্বংস, ১১টি বায়ুসেনা ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু—এই সব কিছু পাকিস্তানকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিল, এবার ভারতের প্রতিক্রিয়া হবে আগে কখনও দেখা যায়নি এমন কায়দায়।
জলচুক্তিও অস্ত্র—নতুন কূটনৈতিক কৌশল
পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরেই ভারত সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করে। এবার যুদ্ধের সঙ্গে কূটনীতির মেলবন্ধন তৈরি করে নয়াদিল্লি। বার্তা স্পষ্ট—সন্ত্রাসে মদত দিলে জলও বন্ধ থাকবে। ‘নিউ নর্মাল’ হিসেবে উঠে আসছে এই কৌশল।
যুদ্ধের বদলে যুদ্ধ—নতুন রণনীতি
মোদী সরকারের শীর্ষ মহল জানাচ্ছে, এবার থেকে সন্ত্রাস মানেই যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধের জবাবও দেওয়া হবে যুদ্ধ দিয়েই। পাকিস্তান যেন জানে, ভারত চুপ করে বসে থাকবে না। ১০০ কিমি ভিতরে ঢুকে হামলার ঘটনাই তার বড় প্রমাণ।
সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব, কিন্তু সতর্ক ভারতের বাহিনী
শনিবার সংঘর্ষবিরতির কথা হলেও রবিবার ফের সীমান্ত লঙ্ঘন করে পাকিস্তান। ভারতও জানিয়ে দেয়—গুলির জবাব গুলিতেই আসবে। UAV বা ড্রোন ব্যবহার করেও পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে, পাল্টা জবাবও মিলেছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
লখনউতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ স্পষ্ট জানান, ‘‘এটা শুধু সামরিক অভিযান নয়, এটা ভারতের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইচ্ছাশক্তির প্রতীক। এবার জঙ্গিরা জানবে, সীমান্ত পেরোলেও রেহাই নেই।’’