ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। সীমান্তে টানা তিন দিন ধরে চলছে গুলি-বোমার লড়াই। সেনা সূত্র বলছে, দুই দেশেরই সেনা চূড়ান্ত সতর্কতায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা। যদিও এখনো নিশ্চিত নয় কী হবে, তবে সাধারণ মানুষের সচেতন থাকা জরুরি। যুদ্ধ যদি বড় রূপ নেয়, তাহলে পারমাণবিক বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে আগে থেকেই কিছু জিনিস প্রস্তুত রাখা খুব দরকার।
বিকিরণ থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা
পরমাণু বিস্ফোরণের পরে সবচেয়ে বড় বিপদ হলো রেডিয়েশন বা বিকিরণ। এটি শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এখনই বাড়িতে রাখতে হবে আয়োডিন (KI) ট্যাবলেট, যা থাইরয়েড গ্ল্যান্ডকে রক্ষা করে। সঙ্গে ডসিমিটার থাকলে আপনি বুঝতে পারবেন রেডিয়েশনের মাত্রা কতটা। এছাড়াও N95 মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করলে বাতাসে থাকা ক্ষতিকর কণা শরীরে ঢুকবে না।
খাবার ও জলের সংরক্ষণ
বিপদের সময় বাজার বা রান্নার সুযোগ নাও থাকতে পারে। তাই কমপক্ষে ৩ দিনের খাওয়ার জল ও প্যাকেট জাতীয় শুকনো খাবার মজুত রাখুন, যেগুলো রান্না ছাড়াও খাওয়া যায়।
যোগাযোগের ব্যবস্থা ঠিক রাখুন
যুদ্ধের সময় মোবাইল বা ইন্টারনেট কাজ না-ও করতে পারে। তাই হ্যান্ড-ক্র্যাঙ্ক রেডিও বা ব্যাটারিচালিত রেডিও রাখুন, যাতে সরকার বা সংবাদমাধ্যমের আপডেট পাওয়া যায়। পাশাপাশি একটা হুইসেল রাখলে বিপদের সময় আশেপাশের কাউকে সংকেত দেওয়া সম্ভব হবে।
আলো ও চার্জিং সুরক্ষা
বিদ্যুৎ চলে গেলে কাজে লাগবে টর্চলাইট ও অতিরিক্ত ব্যাটারি। এছাড়াও মোবাইল চার্জ করার জন্য সোলার চার্জার রাখলে উপকার হবে। অন্ধকারে চলাফেরা ও খবর নেওয়ার জন্য এগুলো অত্যন্ত দরকারি।
প্রাথমিক চিকিৎসার কিট
বিপদের সময় হাসপাতালে যাওয়া কঠিন হতে পারে। তাই বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা কিট, এন্টিসেপটিক, ও প্রয়োজনীয় ওষুধ আগে থেকে মজুত রাখুন। যাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান, সেগুলোও পর্যাপ্ত পরিমাণে তুলে রাখুন।
স্যানিটেশন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
সাফসুতরো থাকা এই সময়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই সাবান, তোয়ালে, স্যানিটারি মোছা এবং যদি সম্ভব হয় টয়লেট ব্যাগ রেখে দিন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে সংক্রমণের আশঙ্কা কমবে।
গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও ঠিকানা
নিজের পরিচয়পত্র, স্থানীয় মানচিত্র, জরুরি যোগাযোগ নম্বর ও নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রের ঠিকানা একটি আলাদা ফাইলে রেখে দিন। এমনকি মোবাইল ছাড়া অবস্থায় এই ডকুমেন্টগুলো খুব কাজে আসবে।
পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে মাথা ঠান্ডা রাখা এবং আগে থেকেই প্রস্তুত থাকা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। আশা করি যুদ্ধ এমন জায়গায় যাবে না, যেখানে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। তবে যদি পরিস্থিতি হাতের বাইরে যায়, সাধারণ মানুষের জীবনরক্ষার জন্য এই প্রস্তুতিটুকু অত্যন্ত জরুরি।