ভারতের সঙ্গে সামরিক এবং কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার সৌদি আরবের ধাক্কা খেল পাকিস্তান। গত ১৬ মাসে সৌদি আরব পাকিস্তানের ৫ হাজার ৩৩ জন নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। সকলেই সৌদি আরবে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভিক্ষার অভিযোগে গ্রেফতার পাকিস্তানিরা!
পাক সংবাদমাধ্যম ডন-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সংসদে পিপিপি (পাকিস্তান পিপলস পার্টি)-র সাংসদ সেহার কামরান একটি লিখিত প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তার উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি জানান, শুধু সৌদি নয়, ইরাক, কাতার, ওমান, মালয়েশিয়া, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও মোট ৫,৪০২ জন পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে বহুজনকে স্থানীয় প্রশাসন গ্রেফতারও করেছে ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে।
সবচেয়ে বেশি ভিক্ষুক ফেরত সিন্ধু প্রদেশ থেকে
সরকারি রিপোর্ট বলছে, ফেরত পাঠানোদের মধ্যে ২৭৯৫ জনই পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাসিন্দা। এরপর রয়েছে পঞ্জাব (১৪৩৭ জন), খাইবার পাখতুনখোয়া (১০২০ জন), বেলুচিস্তান (১২৫ জন), আজাদ কাশ্মীর (৩৩ জন) ও ইসলামাবাদ (১০ জন)। এই সংখ্যা থেকে পরিষ্কার, পাকিস্তানের ভেতরেই একটা বিশাল অংশের মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য ভিনদেশে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির মতো অবৈধ ও অপমানজনক পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন।
২০২৪ সালেই ফেরত ৪৮৫০ জন!
পরিসংখ্যান বলছে, শুধু ২০২৪ সালেই ৪৮৫০ জন পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠানো হয়। আর ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন আরও ৫৫২ জন।
বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়, পাকিস্তানের লজ্জার অধ্যায়
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান এখন আন্তর্জাতিক হাসির খোরাক। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম—সব জায়গাতেই চলছে সমালোচনা। অনেকেই বলছেন, “পেট চালাতে সৌদি যায়, কিন্তু ভিক্ষা করে ধরা পড়ে!”—এই ধরনের ট্রল পোস্ট ভাইরাল হচ্ছে পাকিস্তানের নাম জুড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্দশা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, দেশের গরিব জনগণ ভিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন। আগামী দিনে পাকিস্তানের কি অবস্থা হয় এখন সেটাই দেখার।