ঢাকার কেরানিগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিবেশ একেবারে অন্যরকম। চারপাশে বন্দিদের নিয়মের বাঁধনে বাঁধা জীবন। তার মাঝেই ঘটে গেল এমন এক ঘটনা, যা অবাক করেছে গোটা বাংলাদেশকে। ধর্ষণ, জোর করে আটকে রাখা এবং ব্ল্যাকমেলের মতো গুরুতর অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই জনপ্রিয় গায়ক মঈনুল আহসান নোবেল বিয়ে করলেন ঠিক সেই মহিলাকেই, যিনি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
আদালতের নির্দেশেই বিয়ে, জেলেই আয়োজন
১৮ জুন, ২০২৫—ঢাকার একটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কেরানিগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়, গায়ক নোবেল ও অভিযোগকারিণী মহিলার মধ্যে আইনি বিয়ের বন্দোবস্ত করতে। অভিযুক্ত নোবেল তখন থেকেই জেল হেফাজতে, ১৯ মে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে।
প্রেম থেকে অভিযোগে রূপান্তর
অভিযোগকারিণী এক প্রাক্তন ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী। জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে নোবেলের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। পরে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর একান্তে ডেকে এনে তাঁকে ঢাকার একটি মিউজিক স্টুডিওতে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। প্রায় সাত মাস ধরে সেখানে তাঁকে একাধিকবার যৌন হেনস্থা করা হয়, এমনকি ভিডিও করে ব্ল্যাকমেলও করা হয় বলে দাবি করেছেন ওই মহিলা।
১৯ জুন জেলের মধ্যেই বিয়ে
আদালতের নির্দেশে ১৯ জুন কেরানিগঞ্জ জেলেই সম্পন্ন হয় বিয়ে। উপস্থিত ছিলেন উভয় পক্ষের স্বজন ও চারজন সাক্ষী। বিয়ের সময় জেল কর্তৃপক্ষ এবং একজন কাজীও ছিলেন উপস্থিত। জেলের মধ্যেই একটি আলাদা ঘরে সম্পন্ন হয় সমস্ত প্রক্রিয়া।
আগেই ‘বিয়ে হয়েছিল’ দাবি করেছিল আইনজীবী পক্ষ
নোবেলের আইনজীবীরা আগেই দাবি করেছিলেন, দু’জনের মধ্যে আগে থেকেই বিয়ে হয়েছিল, যদিও তার কোনও নথিভুক্ত প্রমাণ ছিল না। এই বিয়ে সেই ‘অবৈধ’ দাবিকে ছাপিয়ে আদালতের নির্দেশে স্বীকৃতি পেল।
আইনি জট কাটেনি এখনই
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিয়ে হলেও ধর্ষণ, আটক রাখা এবং ব্ল্যাকমেলের মতো অভিযোগ থেকে নোবেল এখনই মুক্ত নন। মামলা চলতে থাকবে আইন মাফিক। অভিযোগকারিণী চাইলে মামলা চালিয়ে যেতে পারেন। ফলে এই বিয়ে আইনত সব সমস্যার সমাধান নয়।