সোনা—ভারতীয় বাজারে একদিকে যেমন আবেগ, তেমনই নিরাপদ বিনিয়োগের প্রতীক। প্রতিদিনের মূল্যের সামান্য ওঠানামা মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত—সব শ্রেণির মনোযোগ কেড়ে নেয়। আজ মঙ্গলবার, সোনার দামে দেখা গেল হালকা পতন। তবু বাজার মোটের উপর স্থিতিশীল বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
বর্তমানে কোন ক্যারেটের সোনার দাম কত?
আজকের বাজারে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি গ্রামে ₹৯,৯২১, যা গতকালের তুলনায় ₹১ কম। ২২ ক্যারেটের সোনা আজ বিক্রি হয়েছে ₹৯,০৯৪ প্রতি গ্রামে এবং ১৮ ক্যারেটের দাম দাঁড়িয়েছে ₹৭,৪৪১। তিনটি ক্যারেটেই ₹১ করে হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে। এই ক্ষুদ্র পরিবর্তনকে সাধারণ মূল্য সংশোধন বলেই ধরে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। গত ১০ দিনে সোনার বাজারে বড় কোনও অস্থিরতা না দেখা গেলেও, স্বল্পমাত্রায় ওঠানামা লক্ষ্য করা গেছে। ১৬ জুন ছিল সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ, তখন ২৪ ক্যারেট সোনার দাম উঠেছিল ₹১০,১৫১ প্রতি গ্রামে। পরদিনই তা কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছিল ₹১০,০৩৭। বর্তমানে সেই তুলনায় বেশ কিছুটা কম দামে বেচাকেনা হচ্ছে সোনা, যদিও হ্রাসের হার যথেষ্ট সীমিত।
বিভিন্ন শহরে দামের পার্থক্য
ভারতের ভৌগোলিক বিস্তারের পরেও সোনার দামে খুব বেশি ফারাক নেই। কলকাতা, মুম্বই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু—সব শহরেই আজ ২৪ ক্যারেট সোনার দাম এক জায়গায় স্থির রয়েছে, ₹৯,৯২১ প্রতি গ্রামে। দিল্লি অবশ্য এই তালিকায় ব্যতিক্রম। সেখানে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম আজ ছিল ₹৯,৯৩৬, যা অন্য শহরের তুলনায় সামান্য বেশি।
আন্তর্জাতিক তুলনায় ভারতের সোনার দাম কেমন?
বিশ্ববাজারের সঙ্গে তুলনা করেও ভারতীয় বাজারকে খুব একটা বিচ্যুত মনে হচ্ছে না। সিঙ্গাপুরে বর্তমানে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রায় ₹৯,৯০৮ প্রতি গ্রামে এবং সৌদি আরবে তা ₹৯,৩৬৯। ভারতীয় দামের সঙ্গে এই তুলনা দেখায়, দেশীয় বাজার বেশ প্রতিযোগিতামূলক এবং স্থিতিশীলভাবে চলছে।
বিশ্লেষকদের মত কী বলছে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য এই পতন স্বাভাবিক। এটি বাজারের স্বাভাবিক শোধন প্রক্রিয়ার অংশ। ডলার ইনডেক্স, আন্তর্জাতিক অর্থনীতি, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির মনেটারি পলিসি এবং ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন—এই সব মিলিয়ে সোনার বাজারে অস্থিরতা তৈরি হলেও, আপাতত স্থিতাবস্থা বজায় আছে বলেই তাঁরা মনে করছেন।
কোথায় এখন বিনিয়োগে সুবিধা?
যাঁরা সোনায় বিনিয়োগে আগ্রহী, তাঁদের জন্য এই দামে কেনা লাভজনক হতে পারে। কারণ সাম্প্রতিক দামের পতনের পরে দাম আবার বাড়তে পারে বলেই অনেকের মত। ফলে এখনও সোনা কেনার সিদ্ধান্ত বেশ কার্যকর হতে পারে। বিয়ের মরসুম, উৎসবের আগাম প্রস্তুতি ও বিনিয়োগ—এই তিন কারণে সোনার চাহিদা এখনও উচ্চতর স্তরে রয়েছে। ফলে বাজারে বড়সড় মন্দার সম্ভাবনা আপাতত নেই।