TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

১৫০ টাকার টিকিটে কোটিপতি! লটারির নেশাই বদলে দিল বহরমপুরের পরিযায়ী শ্রমিকের ভাগ্য

মাত্র ১৫০ টাকার লটারিতে ১ কোটি টাকা জিতলেন বহরমপুরের পরিযায়ী শ্রমিক জাকির শেখ! দুই মেয়ের বিয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা জাকিরের ভাগ্য বদলে দিল একটি টিকিট। দেখুন কীভাবে নেশা থেকেই এল নতুন জীবনের সম্ভাবনা।

Debapriya Nandi Sarkar

কথায় আছে, ভাগ্যের চাকা ঘোরে নিঃশব্দে। কিন্তু বাঁশাবাড়ি গ্রামের জাকির শেখের জীবনে সেই চাকা যেন হঠাৎ বজ্রপাতের মতো এসে পড়ল। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক, বছরভর ঘুরে ঘুরে রাজমিস্ত্রির কাজ করে দিন গুজরান করতেন। মাঝে মাঝেই কাটতেন লটারি — কখনও ১০০, কখনও ২০০ টাকার টিকিট। ঘরে ফেরার পথে একটা টিকিট কাটা যেন ছিল তাঁর নেশার মতো। কিন্তু সেই নেশাই একদিন তাঁকে এনে দিল কোটিপতির তকমা!

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

লটারির নেশা থেকেই ইতিহাস

জানা গিয়েছে, বহরমপুরের সাটুই-চৌরিগাছা পঞ্চায়েতের বাঁশাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা জাকির Sheikh সম্প্রতি মুম্বই থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। কাজের সূত্রে বছরের অনেকটা সময় কাটে তাঁর বাইরে। ফেরার সময়েই গত শুক্রবারের আগের শুক্রবার ১৫০ টাকায় একটি ‘ডিয়ার লটারি’ টিকিট কাটেন সাটুই বাজার থেকে। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই অনলাইনে নম্বর মিলিয়ে দেখেন— এক কোটি টাকার লটারি জিতে গিয়েছেন তিনি! নম্বর মেলার খবর ছড়াতেই চারদিক থেকে আত্মীয়-স্বজনের ভিড় তাঁর বাড়িতে। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার স্বার্থে ১২ জন ঘনিষ্ঠকে সঙ্গে নিয়েই থানায় হাজির হন জাকির, তারপর সেখান থেকেই টিকিট জমা দেন স্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে।

“দুই মেয়ের বিয়ের জন্য চিন্তায় থাকতাম…”

লটারি জেতার পর একেবারে বদলে গিয়েছে বাঁশাবাড়ির এই শ্রমিকের জীবনচিত্র। সংবাদমাধ্যমকে জাকির Sheikh বলেন,
“দুই মেয়ে রয়েছে আমার। তাদের বিয়ে নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকতাম। আজ মনে হচ্ছে ভগবান মুখ তুলে চেয়েছেন। ওদের বিয়েটা এবার ভালভাবে দিতে পারব।” তিনি আরও জানান, কিছু টাকা দিয়ে একটা পাকা বাড়ি তৈরি করারও ইচ্ছে আছে তাঁর। জীবনে এতদিন শুধুই পরিশ্রম করে গিয়েছেন, এবার একটু নিজের মতো বাঁচতে চান।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

গ্রামে উৎসবের মেজাজ

বাঁশাবাড়ি গ্রামে এখন কার্যত উৎসবের পরিবেশ। সাধারণ একজন শ্রমিক, যাঁকে সকলে চিনত ‘মুম্বইফেরত রাজমিস্ত্রি’ নামে, তিনি আজ এক কোটি টাকার মালিক! পাড়াপড়শির মুখে এখন একটাই কথা— “ভাগ্য থাকলে এমনি করে খুলে যায়, আমরা তো ভাবতেই পারছি না!” এদিকে এলাকার শিশু থেকে বৃদ্ধ—সকলেই এখন সেই লাকি টিকিট দেখতে আসছেন জাকিরের বাড়িতে।

নেশা নয়, এবার অনুপ্রেরণা

জাকির শেখের এই ঘটনা ফের একবার প্রমাণ করে দিল, লটারির মতো অনিশ্চিত খেলা কারও কারও জীবনে বদলের বীজ বুনে দেয়। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি থেকে মানুষ কিছু পায় না, বরং আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। কিন্তু জাকিরের কাহিনি অনেককেই নতুন করে স্বপ্ন দেখাবে। তবে জাকির নিজেই সাবধান করে বলছেন—
“নেশা করে নয়, আশা নিয়ে খেলেছি। আজ ভাগ্য সহায় হয়েছে। কিন্তু এটাকে নিয়মে না পরিণত করাই ভাল।”

মাটি ছোঁয়া মানুষ, স্বপ্ন দেখা চোখ আর অটুট বিশ্বাস — এই তিনে মিলে জাকির শেখ আজ এক কোটির মালিক। দু’দিন আগেও যিনি ছিলেন চিন্তিত বাবা, আজ তিনি মেয়েদের বিয়ে, বাড়ি তৈরির স্বপ্নপূরণের পথে। এ যেন বাস্তব জীবনের এক মোড় ঘোরানো গল্প—যেখানে ভাগ্য এক নিমেষে বদলে দেয় জীবন।