কলকাতার শান্ত আকাশে হঠাৎ করেই দেখা মিলল একাধিক ড্রোনের। রাতের বেলা, শহরের বন্দর এলাকা এবং আইকনিক ‘দ্য ফর্টি টু’ বিল্ডিংয়ের ওপর দিয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেল ৪টি রহস্যময় ড্রোনকে। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি অনুযায়ী, ড্রোনগুলো বেশ কিছুক্ষণ আকাশে চক্কর কেটেছে, তারপর হঠাৎ করেই মিলিয়ে যায়।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসে লালবাজার। সূত্র বলছে, কোনও অনুমতি ছাড়াই এই ড্রোনগুলো শহরের উপর দিয়ে ওড়া শুরু করেছিল, যার উৎস কোথা থেকে তা এখনও অজানা। এমন স্পর্শকাতর এলাকার আশপাশে ড্রোন উড়তে দেখা যাওয়ায় চিন্তিত প্রশাসন।
কোথা থেকে এলো ড্রোন, চালাল কে?
লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, এখনো স্পষ্ট নয় এই ড্রোনগুলো কোথা থেকে চালানো হয়েছিল বা কে চালিয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ড্রোনগুলোর গতিবিধি খুবই হিসেব করে করা—নির্দিষ্ট কিছু বিল্ডিংয়ের উপর দিয়ে ওড়ানো হয়েছিল। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনও ছবি তোলার প্রমাণ মেলেনি, তবুও সতর্ক রয়েছে গোটা পুলিশ প্রশাসন।
তদন্তে নামল পুলিশ, রাস্তায় টহলদারি
ঘটনার পর শহরের সমস্ত থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে এবং সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। প্রযুক্তিগত সহযোগিতাও নেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তার খাতিরে রাস্তায় অতিরিক্ত টহলদারিও শুরু হয়েছে। লালবাজারের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, “ড্রোনগুলোর উৎস ও চালানোর উদ্দেশ্য স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিষয়টি হালকাভাবে নিতে পারি না।”
সেনাবাহিনীর নজর, বাড়ছে সতর্কতা
‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সময় থেকেই সেনাবাহিনী ড্রোন কার্যকলাপের ওপর নজর রাখছে। এবারের ঘটনায় তারা আরও বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও অফিসিয়াল বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণভাবে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে সেনা। শহরের আকাশে অজানা ড্রোনের উপস্থিতি যে কোনও সময় জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে দিতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নাগরিকদের উদ্বেগ
এই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন শহরবাসী। কেউ বলছেন, এটা নিছক পরীক্ষা হতে পারে, আবার কেউ আশঙ্কা করছেন বড় কোনও ষড়যন্ত্রের প্রস্তুতি। যেভাবে ‘দ্য ফর্টি টু’-এর মতো বহুতলের ওপর ড্রোন উড়েছে, তাতে সাধারণ নাগরিকের মধ্যে এক অজানা ভয় কাজ করছে।
প্রশাসনের বার্তা
পুলিশ ও প্রশাসনের তরফ থেকে এখনই আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তবে যে কোনও তথ্য থাকলে নাগরিকদের তা দ্রুত পুলিশকে জানানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, “আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। শহরের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না।”