Property Scam Kolkata : বুকিং হয়েছিল সময়মতো, পেমেন্টও মিটেছে নিয়ম মেনে। কিন্তু নির্ধারিত দিনে ফ্ল্যাটের চাবি তো দূর, নির্মাণই হয়নি সম্পূর্ণ। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে গ্রাহক সুরক্ষা দফতর। পশ্চিমবঙ্গে ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে জমা পড়া মোট অভিযোগের বড় অংশ এখন আবাসন সম্পর্কিত প্রতারণার বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৩,৫৯৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনে। তার মধ্যে ৪০ শতাংশ অভিযোগ শুধুই ফ্ল্যাট সংক্রান্ত। কখনও সময়মতো চাবি না পাওয়া, কখনও প্রতিশ্রুত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়া—অভিযোগের ধরন নানা হলেও, সমস্যার শিকড় একটাই: রিয়েল এস্টেট প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবের মধ্যে বিস্তর ফারাক।
সময়মতো চাবি নয়, উলটে প্রতারণার শিকার
যাদবপুর এলাকার অলোকেন্দু চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি একটি আবাসনে বুকিং করেছিলেন যেখানে ফলস সিলিং সহ একাধিক সুবিধার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণ শেষে দেখা যায়, ওই সুবিধা বাদ পড়েছে। অভিযোগ জানিয়ে তিনি কমিশনের দ্বারস্থ হন। দীর্ঘ বিচারপর্ব শেষে, ৪.৩৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পান তিনি। অন্যদিকে, সল্টলেকের পারমিতা চৌধুরী নামের এক মহিলা তিন বছর আগে ফ্ল্যাট বুক করেছিলেন। পেমেন্ট শেষ হলেও আজ পর্যন্ত সেই ফ্ল্যাটের চাবি পাননি তিনি। তাঁর অভিযোগ এখনও বিচারাধীন।
অভিযোগ শুধু আবাসন নয়, পণ্যের প্রতারণাও
গ্রাহক সুরক্ষা দফতর জানাচ্ছে, ফ্ল্যাট ছাড়াও ২১ শতাংশ অভিযোগ ইলেকট্রনিক্স পণ্য নিয়ে প্রতারণা সংক্রান্ত। কেউ টিভি কিনে ভাঙা পণ্য পেয়েছেন, কেউ আবার অনলাইন অর্ডারে ভিন্ন প্রোডাক্ট হাতে পেয়েছেন। এছাড়া, ৯ শতাংশ অভিযোগ অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার বিরুদ্ধে, যেখানে ছাড়ের নামে বাড়তি চার্জ ধার্য করা হয়েছে।
গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে অনেকক্ষেত্রেই কমিশনের হস্তক্ষেপে সমাধান মিলেছে। মোট অভিযোগের প্রায় অর্ধেকের নিষ্পত্তি হয়েছে ২০২৪ সালের মধ্যেই। দফতরের তরফে বলা হয়েছে, গ্রাহকদের সচেতনতা বাড়লেই প্রতারণার সংখ্যা কমবে, এবং বিক্রেতারাও দায়বদ্ধ থাকবে।