রাজ্য সরকারি কর্মীদের বহু প্রতীক্ষিত বকেয়া DA (Dearness Allowance) নিয়ে অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের রায়। আদালতের নির্দেশ, আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে।এই সিদ্ধান্তে যখন সরকারি মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতিক্রিয়া দিলেন। মমতা ব্যানার্জী জানালেন, “আমি কোর্টের কেস নিয়ে কিছু বলি না। যা করি, আইনতই করি।”
আইনের প্রতি দায়বদ্ধতা, নাকি দায়িত্ব এড়ানো?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্য আইন মেনেই চলার ইঙ্গিত দিলেও, তাঁর এই নীরবতা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, “উনি কী বললেন সেটা নয়, কী করলেন সেটা আসল। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কোর্টের নির্দেশ মানা ও বাস্তবায়ন করা তাঁর দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, কোর্ট ইতিমধ্যেই বলেছে, ডিএ পুরোটা দিতে হবে। এখন যদি মুখ্যমন্ত্রী অন্তত ২৫% দেন, বাকিটা মেটানোও জরুরি।
রিভিউ পিটিশনের পথে হাঁটবে কি রাজ্য সরকার?
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে গুঞ্জন—রাজ্য কি সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দেবে? কারণ রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙভি শুনানির সময় বলেছেন, “৫০ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে গেলে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা লাগবে। এটা রাজ্য সরকারের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।”
এই কথা শোনার পরেই আদালত আপাতত ২৫% ডিএ মেটানোর নির্দেশ দেয়। তবু রাজ্য সরকারের তরফে এখনও কোনও নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া আসেনি।
বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে ভাস্কর ঘোষ জানিয়েছেন, “আমরা চাই রাজ্য সরকার রিভিউ-এ যাক। যদি সরকার নীরব থাকে, তাহলে আমরা নবান্ন অভিযানের ডাক দেব।” তিনি আরও বলেন, “রিভিউ পিটিশনে গেলে যাতে ২৫% থেকে ৫০% বকেয়া আদায়ের রাস্তা তৈরি হয়, সেই চেষ্টাও করা হবে।
একদিকে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ, অন্যদিকে রাজ্যের আর্থিক চাপ। মুখ্যমন্ত্রী মুখে না বললেও, তাঁর পদক্ষেপই এবার বলে দেবে—সরকার আদৌ আইন মেনে কর্মীদের পাশে দাঁড়াবে, নাকি সময়ক্ষেপণেই থাকবে ভরসা?