অগ্নিগর্ভ পাকিস্তান আরও উত্তাল। শুক্রবার সন্ধ্যায় সুরাব শহরে বড়সড় অভিযান চালিয়ে শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর ও ভবনের দখল নেয় বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA)। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশ স্টেশন, ব্যাঙ্ক এবং লেভি স্টেশন-সহ একাধিক সরকারি স্থাপনায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে সেই দৃশ্যের ভিডিয়ো।
সামরিক ও প্রশাসনিক দপ্তরে আগুন, নিহত পুলিশ আধিকারিক
জানা গিয়েছে, এই অভিযানে এক স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) নিহত হন। বিদ্রোহীরা বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার দাবি করেছে। শুধু তাই নয়, কোয়েটা-করাচি ও সুরাব-গিদার রাস্তাজুড়ে টহল দিচ্ছে বিএলএ-র সদস্যরা, যার জেরে শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিপর্যস্ত।
উদ্বেগে পাক প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান
এই ঘটনায় প্রবল চাপে পাকিস্তান সরকার ও সেনা। যদিও সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি, তবে পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান আসিম মুনির উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে সূত্রের খবর। বালোচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ স্বীকার করেছেন, বিদ্রোহীরা ব্যাঙ্ক লুট করেছে ও একাধিক সরকারি আবাসনে আগুন ধরিয়েছে।
বালোচদের ক্ষোভের শিকড় কোথায়?
পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ বালোচিস্তান বহু দশক ধরেই বঞ্চনার অভিযোগ তুলে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৪৮ সালে এই অঞ্চলকে বলপূর্বক অন্তর্ভুক্ত করা হয় বলে দাবি বালোচদের। তাঁদের অভিযোগ, গ্যাস ও খনিজে সমৃদ্ধ এই এলাকা থেকে ইসলামাবাদ কেবল লুট করে যাচ্ছে, আর স্থানীয়দের ভাগ্যে শোষণ, বেকারত্ব ও দারিদ্র্য।
বিদ্রোহের কৌশলে বদল, এবার বড়সড় অভিযান
বিএলএ এবার আর শুধু গেরিলা হামলায় সীমাবদ্ধ নেই। সামরিক শক্তি সঞ্চয় করে তারা এখন শহর দখলের মতো কৌশলে হাঁটছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থানীয়দের সমর্থন থাকায় বিদ্রোহ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। চিনের সঙ্গে থাকা প্রকল্পগুলিও বিএলএ-র নিশানায়। ফলে গোটা অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।