গ্রীষ্মের শেষ প্রান্তে এসেও তাপপ্রবাহে স্বস্তি নেই শহরবাসীর। আজ, সোমবার, কলকাতা শহরে সকাল থেকেই সূর্যের দাপট তীব্রতর হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজকের দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আদ্রতা ও গরম মিলিয়ে শরীরজুড়ে এক রকমের ক্লান্তি ও অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে রোদের তীব্রতা ছিল মারাত্মক। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে ‘রিয়েল ফিল’ বা অনুভূত তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি ছুঁয়েছে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।
বর্ষার অপেক্ষায় দক্ষিণবঙ্গ
আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে একটি নিম্নচাপ ধীরে ধীরে শক্তি বাড়াচ্ছে। আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেটি ঘূর্ণাবর্তে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গ, বিশেষ করে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া ও দুই ২৪ পরগনায় প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি শুরু হতে পারে এই সপ্তাহের শেষে।
হাওয়া অফিসের মুখপাত্র বলেন, “বঙ্গে এখনই মৌসুমি বায়ুর প্রবেশের সম্ভাবনা নেই, তবে নিম্নচাপের কারণে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হতে পারে। মূল বর্ষা পৌঁছতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।”
গরমে অসুস্থ হচ্ছেন অনেকেই
চিকিৎসকদের মতে, এই তীব্র গরমে রোদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ থাকা খুব বিপজ্জনক হতে পারে। ইতিমধ্যেই শহরের বেশ কিছু হাসপাতালে হিট স্ট্রোক, মাথা ঘোরা, ডিহাইড্রেশন এবং রক্তচাপজনিত সমস্যার কারণে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক নাগরিকদের প্রতি আলাদা নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি
আবহাওয়া দফতর এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপ্রয়োজনে বাইরে না বেরোনোর অনুরোধ।
- রোদে বের হলে অবশ্যই ছাতা, হালকা রঙের পোশাক ও সানগ্লাস ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
- পর্যাপ্ত জল পান ও শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য মৌসুমি ফল, জলযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ।
- শারীরিক অস্বস্তি বা অসুস্থতা অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, তীব্র গরমের এই পরিস্থিতিতে স্বস্তির বৃষ্টি কবে নামবে, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন কলকাতাবাসী। আপাতত আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তনের জন্য আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতেই হবে বলে মত আবহাওয়াবিদদের।