Today’s Weather : দক্ষিণবঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ষা প্রবেশ করেনি। তবে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, সপ্তাহ ঘুরতেই তা ঘটে যেতে পারে। কিন্তু তার আগেই দুর্যোগের মুখে পড়তে চলেছে দক্ষিণবঙ্গ। কারণ, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে একাধিক ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ অক্ষরেখা। এর জেরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে ঝড়-বৃষ্টির দাপট।
দুই ঘূর্ণাবর্ত, সক্রিয় মৌসুমি অক্ষরেখা
আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দুটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় রয়েছে। একটি দক্ষিণ বাংলাদেশ এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের সংলগ্ন এলাকায়, অপরটি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দক্ষিণ ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত নিম্নচাপ অক্ষরেখা। ফলে দক্ষিণবঙ্গের উপর প্রভাব ফেলছে মৌসুমি বায়ু এবং সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিকূল আবহাওয়ার।
দক্ষিণবঙ্গে কোথায় কোথায় দুর্যোগ?
আগামীকাল সোমবার দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে হতে পারে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি। পাশাপাশি হাওড়া, হুগলি, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনাতেও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলবে। আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা অনুযায়ী, কিছু কিছু জায়গায় ঘণ্টায় ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
উত্তরবঙ্গে বাড়ছে বৃষ্টির তীব্রতা
উত্তরবঙ্গে বর্ষা আগেই ঢুকে পড়েছে। এর ফলেই এই অঞ্চলে বর্ষার বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ইতিমধ্যেই দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ারে জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। আবহাওয়া দফতরের মতে, এই দুর্যোগ চলতে পারে শনিবার পর্যন্ত।
শহর কলকাতার জন্য কী বার্তা?
রাজ্যের রাজধানী কলকাতাতেও আগামীকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখনো বড় কোনও বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে জল জমে যাওয়া ও যানজটের সমস্যা মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে অফিস টাইমে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছে হাওয়া অফিস।
কৃষক ও সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান
আবহাওয়ার এমন রূপ সাধারণ মানুষ ও কৃষকদের জন্য যথেষ্ট চিন্তার। মাঠে থাকা ফসলের ক্ষতি যেমন হতে পারে, তেমনই ঘরে-বাইরে থাকা সাধারণ নাগরিকদেরও সতর্ক থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, বর্ষা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু না হলেও, তার পূর্বাভাসেই দক্ষিণবঙ্গ কার্যত ভিজে উঠেছে। বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা থাকায় আবহাওয়া দফতরের আপডেট নিয়মিত চোখে রাখা অত্যন্ত জরুরি। এই সপ্তাহের আবহাওয়া রাজ্যবাসীর জন্য কতটা সহনীয় হবে, তা বলবে সময়ই।