TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের একেবারে দোরগোড়ায়! ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি ঘিরে ফের উত্তাল বিশ্ব

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি—ইরান খুব শিগগিরই পারমাণবিক অস্ত্রের ক্ষমতা অর্জন করতে চলেছে। এই মন্তব্য ঘিরে ফের উত্তেজনা ছড়াল আন্তর্জাতিক মঞ্চে।

Debapriya Nandi Sarkar

বিশ্ব রাজনীতিতে ফের উত্তেজনার ছায়া। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করে জানিয়েছেন, “ইরান এখন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অত্যন্ত কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে।” তাঁর এই মন্তব্য শুধু আমেরিকাতেই নয়, গোটা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে, যখন মধ্যপ্রাচ্য আগুন জ্বলছে ইজরায়েল-ইরান সংঘর্ষে, তখন এমন বক্তব্য আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে কূটনৈতিক মহলে।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

কী বললেন ট্রাম্প?

একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমরা যখন চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম, তখন ইরান অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের নরম অবস্থান তাদেরকে সেই ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করেছে। এখন তারা প্রায় প্রস্তুত, আর কিছুদিনের মধ্যেই তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে ফেলবে।” তিনি আরও দাবি করেন, তাঁর প্রেসিডেন্সিতে ইরানের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞাগুলি কার্যকর হয়েছিল, তা কার্যত তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে আটকে দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান প্রশাসনের ‘দুর্বলতা’ ইরানকে ফের সক্রিয় করে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: উদ্বেগ ও সতর্ক বার্তা

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরই নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এবং ইজরায়েল ইতিমধ্যেই পৃথকভাবে আলোচনায় বসেছে বিষয়টি ঘিরে। যদিও হোয়াইট হাউস এখনো এই বিষয়ে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি, তবে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট সূত্রে জানা যাচ্ছে, তারা গোয়েন্দা স্তরে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের মন্তব্য একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলে, তেমনই মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা আরও অনিশ্চিত করে তোলে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

ইরানের অবস্থান কী?

তেহরান অবশ্য বারবার দাবি করেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে—বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চিকিৎসা গবেষণার জন্য। তবে পশ্চিমি বিশ্ব বরাবরই এই দাবিতে সন্দেহ প্রকাশ করে এসেছে। ২০১৫ সালের ইরান নিউক্লিয়ার চুক্তি (JCPOA) অনুযায়ী, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে না—এই শর্তেই আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প ২০১৮ সালে সেই চুক্তি থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে নেওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা বাড়ে।

সম্ভাব্য পরিণতি: মধ্যপ্রাচ্য আরও অস্থির?

বর্তমান পরিস্থিতিতে, যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্রের কাছাকাছি পৌঁছে যায়, তবে তা শুধু ইজরায়েলের জন্য নয়, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং তুরস্কের মতো দেশগুলির জন্যও নিরাপত্তার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। এই অস্ত্র ভারসাম্য বদলে দিতে পারে গোটা অঞ্চলের। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথে ইরান এগোলে ইজরায়েল হয়তো আগেভাগে সামরিক হস্তক্ষেপের পথ বেছে নিতে পারে, যা এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে। এ ধরনের সংঘর্ষে শুধুমাত্র এই দুই দেশই নয়, গোটা বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও অর্থনীতির উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।

সামনে কি ফের এক নতুন ঠান্ডা যুদ্ধ?

ট্রাম্পের বক্তব্যকে অনেকেই ২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে কৌশলী মন্তব্য বলেও দেখছেন। তাঁর দাবি—তিনি ক্ষমতায় ফিরলেই ইরানকে ফের নিয়ন্ত্রণে আনবেন। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, এর মাঝখানে যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে ওঠে, তবে তার জবাব কী? এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—কীভাবে কথায় নয়, কাজে ইরানকে নিরস্ত করা যায়, যাতে পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি বাস্তবে রূপ না নেয়। দেখা যাক, ট্রাম্পের এই দাবি শুধু রাজনৈতিক কৌশল, নাকি বাস্তবের এক ভয়ানক সতর্কবার্তা!

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।