TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

২০ জুন বাংলা দিবস? ‘ওরা কারা ঠিক করল’, নবান্নে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী

২০ জুন ‘বাংলা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত ঘিরে ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন তুললেন—এই দিন কে স্থির করল? বাংলার প্রতি অপমান বলেই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Debapriya Nandi Sarkar

২০ জুন ‘বাংলা দিবস’ পালন করবে উত্তরপ্রদেশের রাজভবন—আর সেই চিঠি এসে পৌঁছতেই আগুন ছড়াল রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দফতর নবান্নে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন—“কে ঠিক করল এই দিনটিকে বাংলা দিবস হিসেবে?” মমতার দাবি, এমন সিদ্ধান্ত বাংলার আত্মপরিচয়ের উপর সরাসরি আঘাত। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এটা বাংলার চরম অসম্মান। বিজেপি কি ইচ্ছামতো বাংলা ইতিহাস তৈরি করবে?”

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

‘২০ জুন’-এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন একটি আইনসভায় প্রস্তাব পাস হয়—যাতে পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের অংশ হবে এবং পশ্চিম বাংলা ভারতের। তাঁর কথায়, “দেশ তো স্বাধীন হয়েছে ১৫ অগস্ট। তাহলে ২০ জুন বাংলা প্রতিষ্ঠার দিন কীভাবে হয়?” এই ইতিহাস তুলে ধরেই তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত একতরফা। বাংলার সংস্কৃতি, আত্মপরিচয়, আবেগ—সবকিছুকেই তাচ্ছিল্য করে নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্তে।

রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই নির্ধারণ করেছে ‘বাংলা দিবস’

রাজ্য সরকারের তরফে বাংলা নববর্ষের দিন অর্থাৎ ১ বৈশাখকে ‘বাংলা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আমরাই প্রথম রাজ্য সংগীত নির্ধারণ করেছি, আমরাই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির মর্যাদা রক্ষায় দিন স্থির করেছি। আমাদের মাথার উপর দিয়ে বাংলা দিবস চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

রাজ্যের নাম পরিবর্তনের আবেদনও ঠান্ডাঘরে!

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নাম বদলে শুধুই ‘বাংলা’ রাখার দাবি বহুদিনের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার এই নিয়ে সরব হয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনবার সংশোধিত বিল পাঠানো হলেও কেন্দ্রের তরফে তা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, “মুম্বইয়ের নাম বদলাতে পারে, ওড়িশার নাম বদলাতে পারে, তাহলে বাংলার নাম কেন নয়? পাকিস্তানে যদি পাঞ্জাব থাকে, ভারতে বাংলা থাকতে পারবে না?”

বিরোধীর পালটা সুর—এটাই প্রকৃত বাংলা দিবস!

এ নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এটাই তো প্রকৃত বাংলা দিবস। ওই দিন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ঠিক হয়েছিল পশ্চিম বাংলা পাকিস্তানে যাবে না। আমরা বিজেপির বিধায়করা এই দিনটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করব।”

রাজনৈতিক বিতর্ক না আত্মপরিচয়ের লড়াই?

প্রশ্ন উঠছে, এই বিতর্ক শুধুই রাজনীতি না কি বাংলার আত্মপরিচয়ের প্রশ্ন? একজন বাঙালি হিসেবে ‘বাংলা দিবস’ পালন নিশ্চয়ই গর্বের, তবে সেই দিনটি নির্ধারণে একতরফা সিদ্ধান্ত কি গ্রহণযোগ্য? মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলার সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে যারা সরাসরি যুক্ত, তাদের বাদ দিয়ে কোনও দিন নির্ধারণ মানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা।

২০ জুন ‘বাংলা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত এখন শুধু প্রশাসনিক নয়, এক সর্বভারতীয় বিতর্কে পরিণত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি স্পষ্ট—বাংলার সম্মান নিয়ে কেউ খেলতে পারবে না। এই ঘটনায় আবারও সামনে উঠে এল রাজ্য বনাম কেন্দ্র সংঘাত, এবং তারই আবরণে ধরা দিল এক গভীর প্রশ্ন—বাংলার দিন বাংলাই ঠিক করবে, না দিল্লি?