SSC scam West Bengal : স্কুলের চাকরি একদিন ছিল গর্বের বিষয়। আজ সেই চাকরির স্বপ্ন ভেঙে চুরমার। মালদার বাসিন্দা তাপস কুমার বাগচীর জীবন যেন এখন একটা অন্ধকার টানেলের ভিতর। ২০১৬ সালের Group D SSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন তিনি। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি মামলার জেরে বাতিল হল SSC-র প্যানেল, আর তাপস হারালেন তাঁর একমাত্র অবলম্বন—চাকরি।
চাকরি গেল, হাল ছাড়েননি
৩ এপ্রিল থেকে সরকারি চাকরি নেই। এরপর বহুবার বিক্ষোভ করেছেন কলকাতার SSC ভবন এবং বিকাশ ভবনের সামনে। একসময় মনে হচ্ছিল, আন্দোলনের পথ হয়তো চাকরি ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু ১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত রায় দেওয়ায় সেই আশাও শেষ। তাপসের পরিবারের দায়িত্ব এখন পুরোপুরি তাঁর কাঁধে। বাড়িতে রয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী বাবা, ৬২ বছরের মা, স্ত্রী ও আড়াই বছরের ছোট মেয়ে। আয়ের একমাত্র উৎস ছিলেন তিনি। আর এখন, নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই করতে হচ্ছে কষ্টকর পরিশ্রম—পাইপলাইনের কাজ। সরকারি চাকরির পর এই শারীরিক শ্রম তাঁর কাছে এক নতুন লড়াই।
ভাতাও বন্ধ, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
তাপসদের মতো চাকরি হারানোদের জন্য রাজ্য সরকার যে মাসিক ₹২০,০০০ ভাতার ঘোষণা করেছিল, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশে তাও এখন বন্ধ। তাপস জানান, এই ভাতা থাকলে অন্তত কয়েক ঘণ্টা পড়াশোনা করতে পারতেন, এবং আবার স্কুলে ফেরার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে পারতেন। এখন পাইপলাইনেই কাজ করতে হচ্ছে পূর্ণসময়ে, ফলে ভবিষ্যৎ প্রস্তুতির সুযোগও নেই।
SSC দুর্নীতি মামলায় অনেকের গ্রেফতারি হয়েছে, বিচার চলছে। কিন্তু যারা প্রকৃত মেধার জোরে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে। তাপসদের জীবন যেন আদালতের এক বঞ্চিত প্যারা—যেখানে শাস্তি পেল দোষী না, বরং অসহায় নির্দোষ।