Kaliganj blast 2025 : উপনির্বাচনের ফলাফলে বিজয় উৎসব চলছিল। আর সেই দিনই ঘটল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা—মোলান্দি গ্রামে বিস্ফোরণে মৃত্যু হল এক নাবালিকার। কালীগঞ্জে ভোটগণনার দিনে যখন তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদের রেকর্ড ব্যবধানে জয়ের খবর আসছিল, তখনই এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। ঘটনাটি ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিরোধীদের অভিযোগ, এই মৃত্যুর দায় বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া সকেট বোমার।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
রবিবার, কালীগঞ্জের মোলান্দি গ্রামে আচমকাই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে একটি এলাকা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি সকেট জাতীয় বস্তু হাতে নিয়েই খেলছিল বছর দশেকের এক নাবালিকা। সেই সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে, এবং ঘটনাস্থলেই সে গুরুতর আহত হয়। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। পরিবারের অভিযোগ, মেয়েটি বাড়ির সামনে একটি “কাগজে মোড়া বস্তু” কুড়িয়ে পেয়েছিল। সেটিই সকেট বোমা ছিল বলে সন্দেহ।
বিজয় মিছিলে অভিযোগের তীর
এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের বিজয় মিছিলে চোখ রাঙাতে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপি-সহ অন্যান্য দলগুলির দাবি, তৃণমূল সমর্থকদের পক্ষ থেকেই বিজয় মিছিল থেকে এই সকেট ছোড়া হয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ, উপনির্বাচনে রেকর্ড ব্যবধানে জয় পাওয়ার পর উচ্ছ্বসিত তৃণমূল কর্মীরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই পটাকা ও সকেট জাতীয় বোমা ছোড়েন। আর সেই কারণেই প্রাণ গেল এক নিষ্পাপ শিশুর। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, “উৎসবের নামে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করতেই এই বিপজ্জনক উপায় অবলম্বন করছে শাসকদল।”
তৃণমূলের নীরবতা ও পুলিশের তদন্ত
এই ঘটনার পরেও এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। দলের স্থানীয় নেতৃত্বও মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সকেট জাতীয় বিস্ফোরক কিভাবে এলাকায় এল, কে বা কারা তা ফেলেছিল, তা জানতে খোঁজ চালানো হচ্ছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নেওয়া হয়েছে, ফরেনসিক টিমও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
শোক ও ক্ষোভ একসঙ্গে এলাকায়
নাবালিকার মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া। গ্রামবাসীরা যেমন ক্ষুব্ধ, তেমনই আতঙ্কিতও। সকেট জাতীয় বিস্ফোরক এত সহজে রাস্তায় পড়ে থাকে কীভাবে, সেই প্রশ্ন উঠছে সকলের মুখে। একদিকে রাজনৈতিক বিজয়ের উচ্ছ্বাস, অন্যদিকে একটি পরিবারের জন্য চিরস্থায়ী ক্ষতি—এই দুই মেরুর অনুভূতি একসঙ্গে দেখা গেল কালীগঞ্জের মোলান্দিতে।