এক সেনা জওয়ানকে মিথ্যা অপহরণের মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল এক নারী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে অপহরণের নাটক সাজিয়ে একটি নির্দোষকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালানো হয়েছিল। নাটকীয় এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ঘোলা থানার পুলিশ অভিযুক্ত সঙ্গীতা সিংকে গ্রেপ্তার করেছে।
অপহরণের নামে প্রতারণা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ মে নিজের পরিচিত গাড়িচালকের কন্যাকে অপহরণের অভিযোগ তুলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সঙ্গীতা। জানান, ওই মেয়ে নিখোঁজ এবং এক সেনা জওয়ানই তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছেন। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে মেয়েটির মোবাইল শেষ অবস্থান ডোমজুড়ে। তদন্ত চালিয়ে ৪ জুন সেই নাবালিকাকে উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মেয়েটি কোনও অপহরণের শিকার হয়নি, বরং প্রেমিক কৌশিক বোসের সহযোগিতায় সঙ্গীতা নিজেই ওই ‘অপহরণ নাটক’ রচনা করেছিলেন।
পুনরাবৃত্ত চক্রান্ত
এখানেই শেষ নয়। একই ধরনের ঘটনা ফের ঘটানো হয় দাশনগরে। সেখানে এক সেনা জওয়ানকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে আবারও সাজানো হয় অপহরণের গল্প। তবে আগের ঘটনার ছায়া পড়ায় পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে এবং রবিবার রাতে সঙ্গীতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বারবার একই পদ্ধতিতে সেনা কর্মীদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ তোলার পিছনে সঙ্গীতা এবং তার প্রেমিক কৌশিক বোসের উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা এবং ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকির মাধ্যমে চাপ তৈরি করা। সোমবার সঙ্গীতাকে ব্যারাকপুর আদালতে পেশ করা হয়। আদালত তাকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্তের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে সে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।
ঘোলার স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, “এত বড় চক্রান্ত এত সময় ধরে কীভাবে চলল—তা ভাবলে শিউরে উঠতে হয়।” পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আরও কেউ থাকলে তাকেও শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।