Ghatal Flood : বন্যার জলে ভাসছে ঘাটালের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। নৌকা নেই, খাবার নেই, নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থাও। এই অবস্থায় কেন্দ্রের দ্বারস্থ হলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে চিঠি লিখে তিনি আবেদন জানিয়েছেন, জাতীয় ত্রাণ তহবিল (National Relief Fund) থেকে ঘাটালের বন্যাক্রান্ত মানুষদের জন্য জরুরি ত্রাণ সাহায্য পাঠানো হোক।
বিধায়ক নিজে দু’দিন আগে বন্যা কবলিত ঘাটালের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখেন। সেখান থেকেই উঠে আসে উদ্বেগজনক চিত্র। বহু মানুষ এখনও জলমগ্ন ঘরে আটকে রয়েছেন। কিছু জায়গায় মানুষজনকে হাঁটুজলে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। কোথাও নেই নৌকার ব্যবস্থা, কোথাও আবার খাবার ও পানীয় জলের সংকট প্রবল। বিধায়কের অভিযোগ, রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি চিঠি
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন বিধায়ক হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, রাজ্যের অব্যবস্থার জেরে ঘাটালের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পাঠানো হোক। তাঁর দাবি, শুধু ঘাটালের মানুষের প্রাণ বাঁচানো নয়, ভবিষ্যতের জন্যও প্রয়োজন একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।
মাস্টার প্ল্যান নিয়ে রাজনীতি
বিধায়কের এই চিঠিকে কেন্দ্র করে ফের রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নে গড়িমসি করছে। অথচ কেন্দ্র ২০২২ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের প্রথম পর্বে ₹১,২৩৮.৯৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। রাজ্যের দায়িত্ব ছিল জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা করা। রাজ্যের পক্ষ থেকে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাজ্য নিয়ে নিলেও কেন্দ্রীয় সহায়তা যথাসময়ে মেলেনি। ফলে প্রকল্প আটকে রয়েছে।
ঘাটালের বাসিন্দারা চাইছেন দ্রুত ত্রাণ ও স্থায়ী বন্যা রোধ ব্যবস্থা। রাজনৈতিক তরজার মাঝেও স্থানীয় মানুষজনের প্রশ্ন—কে দেবে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর বাস্তব প্রতিশ্রুতি? বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার বন্যা পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে ঘাটালে প্রয়োজন পরিকল্পিত ও টেকসই পরিকাঠামো। কাদা-জলেই আটকে থাকলে, বছরের পর বছর এই একই ছবি থেকে মুক্তি মিলবে না।