স্কুল পালিয়ে স্নানে গিয়ে ঘটল বিপত্তি। দ্বারকেশ্বর নদীর প্রবল স্রোতে তলিয়ে গেল একাদশ শ্রেণির তিন পড়ুয়া। মঙ্গলবার দুপুরে ব্যাঙ্কুরার বিষ্ণুপুর থানার সারদেশ্বর শিবমন্দির সংলগ্ন ঘাট থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় তিন ছাত্র। সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশি চালালেও তাদের সন্ধান মেলেনি। ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবার ও এলাকা।
স্কুল পালিয়ে নদীর ঘাটে
নিখোঁজ পড়ুয়াদের নাম—অর্কদীপ দাস, সায়ন চট্টোপাধ্যায় ও পরমেশ্বর মিশ্র। এরা তিনজনই বিষ্ণুপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় ৮–১০ জন পড়ুয়া একসঙ্গে স্কুল থেকে বেরিয়ে সাইকেল চেপে নদীর ঘাটে পৌঁছয়। স্নানের সময় আচমকাই তীব্র স্রোতে ভেসে যায় তিন বন্ধু। সঙ্গে থাকা সহপাঠীরা প্রথমে নিজেরাই উদ্ধারের চেষ্টা করে। কিন্তু নদীর গতি এতটাই জোরাল ছিল যে কিছুই করা যায়নি। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা খবর পেয়ে দ্রুত তল্লাশিতে নামেন। কিন্তু ততক্ষণে নিখোঁজ হয় ওই তিনজন।
উদ্ধার তৎপরতা ও উদ্বিগ্ন পরিবার
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। একটি স্পিড বোট দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে খোঁজখবর। তবে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত কোনও সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ ছাত্রদের। পুলিশ সূত্রে খবর, নদীর প্রবাহ অত্যন্ত বিপজ্জনক হওয়ায় তল্লাশি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বুধবার সকালে আবার অভিযান শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে, তিন ছাত্রের পরিবারে শোকের ছায়া। সায়নের বাবা চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় জানান, “ছেলেরা স্কুল থেকে বেরিয়েছিল। এখন পর্যন্ত কিছুই জানা যাচ্ছে না। খালি চোখে নদীর দিকে তাকিয়ে আছি আমরা।”
স্থানীয়দের প্রশ্ন: নিরাপত্তা কোথায়?
ঘটনাস্থল, সারদেশ্বর শিবমন্দির সংলগ্ন ঘাট এলাকায় স্নান করতে প্রায়শই ছেলেমেয়েরা আসে। কিন্তু কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। নদীর ঘাটে নেই কোনও নিরাপত্তারক্ষী, নেই বিপদের সতর্কবার্তাও। ফলে বারবার এমন বিপজ্জনক ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। একজন বাসিন্দা বলেন, “নদীর স্রোত এই সময়ে খুবই জোরে থাকে। ছেলেরা না জেনেই ঝুঁকি নিয়ে স্নানে নেমেছিল। প্রশাসনের উচিত এই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো।” পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নিখোঁজদের খোঁজে সমস্ত চেষ্টা চলছে। আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে নদীর গভীরে তল্লাশির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ছাত্রদের নিরাপত্তা ও নজরদারির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।