Sealdah Krishnanagar AC local : একদিকে যাত্রীসেবায় আধুনিকতার ছোঁয়া, অন্যদিকে যাত্রীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। শিয়ালদা-কৃষ্ণনগর রুটে চালু হয়েছে নতুন এসি লোকাল ট্রেন। এ দেশে লোকাল ট্রেন মানেই সুলভ ভাড়া আর গাদাগাদি ভিড়। সেখানে এক ধাক্কায় যদি দমদম যেতে ২৯ টাকা বা কৃষ্ণনগর পৌঁছতে লাগে ১৩২ টাকা—তবে প্রশ্ন জাগতেই পারে, এত টাকা দিয়ে রোজ কেউ উঠবে কি এই ট্রেনে?
কেমন এই নতুন এসি ট্রেন?
পুরোপুরি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এই নতুন রেকটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় ঠাসা। ট্রেনটি শিয়ালদা থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য এবং নিরাপত্তার দিকটি মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি কামরায় থাকছে:
-
CCTV ক্যামেরা,
-
টকব্যাক সিস্টেম,
-
GPS-চালিত ঘোষণাব্যবস্থা,
-
স্বয়ংক্রিয় দরজা, যা কেবল স্টেশনে থামলেই খুলবে ও বন্ধ হবে।
মেট্রোর আদলে তৈরি এই এসি লোকাল এখন থেকে শিয়ালদা থেকে কৃষ্ণনগর যাত্রাকে আরও নিরাপদ ও প্রযুক্তিনির্ভর করে তুলবে।
কতটা ভাড়া গুনতে হবে যাত্রীদের?
এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক নতুন ট্রেনের প্রধান স্টেশনগুলোর ভাড়া:
-
শিয়ালদা → দমদম: ₹29
-
শিয়ালদা → বাধারকপুর: ₹56
-
শিয়ালদা → রানাঘাট: ₹111
-
শিয়ালদা → কৃষ্ণনগর: ₹132
নিত্যযাত্রীদের জন্য রোজকার টিকিট ছাড়াও থাকছে সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক টিকিটের সুবিধা, যা কিছুটা হলেও ভাড়ার বোঝা কমাবে।
নিরাপত্তা ও আরামের দিক থেকে প্লাস পয়েন্ট
এসি কামরা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্মার্ট ঘোষণা, বন্ধ-দরজা ব্যবস্থা—সব মিলিয়ে যাত্রীরা এক উন্নত রেল-অভিজ্ঞতার সাক্ষী হবেন। এমনকি যাত্রীদের সুবিধার্থে থাকছে টকব্যাক সিস্টেম—যার মাধ্যমে জরুরি মুহূর্তে রেল কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব।
তবু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—জনগণের সাধ্যের বাইরে নয় তো এই ভাড়া?
অনেকেই বলছেন, যাঁরা আগে মাসিক ৪০-৫০ টাকার টিকিটে যাতায়াত করতেন, তাঁদের পক্ষে এই এসি ট্রেন একপ্রকার বিলাসিতা। মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত যাত্রীরা এই ট্রেন এড়িয়ে চলতেই পারেন। তবে অন্য অংশের মতে, গরমের সময় স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কেউ কেউ বাড়তি ভাড়া মেনে নিতেও রাজি হবেন।
রেলের আশা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীদের মধ্যে ধীরে ধীরে এই আধুনিক ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহ বাড়বে। আর যদি ট্রেনটিতে যথেষ্ট যাত্রী পাওয়া যায়, ভবিষ্যতে অন্য রুটেও এমন এসি লোকাল চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হতে পারে।