Kasba Collage Crime : দক্ষিণ কলকাতার কসবা এলাকায় অবস্থিত এক সরকারি আইন কলেজে ঘটে গেল এক ভয়াবহ ঘটনা। কলেজ চত্বরের মধ্যেই এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে এসেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ—যার মধ্যে দু’জন কলেজের কর্মী, এবং একজন প্রাক্তন ছাত্র। আবারও শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি সামনে উঠে এল, তৈরি হল প্রবল চাঞ্চল্য।
রাতে কলেজ ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ
২৫ জুন, মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলায় ওই ছাত্রী কলেজে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিটের মধ্যে তাঁকে কলেজ চত্বরে একটি ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে তিনজন মিলে ধর্ষণ করে। ছাত্রী বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের সব জানান। পরদিন সকালেই কসবা থানায় দায়ের করা হয় লিখিত অভিযোগ। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে। এঁদের মধ্যে দু’জন কলেজে কর্মরত এবং অপরজন কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, যিনি ২০২২ সালে আইন পাঠ শেষ করেছেন। তদন্তকারীদের অনুমান, অভিযুক্তরা ছাত্রীর পরিচিত ছিলেন।
মেডিকেল পরীক্ষার পরই গ্রেফতার
পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি সরকারি হাসপাতালে। সেখানে ফরেনসিক পরীক্ষার পর কিছু মেডিকেল নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই রিপোর্ট হাতে পেয়েই তিনজনকে গ্রেফতার করে কসবা থানার পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার পূর্ণ বিবরণ জানার চেষ্টা চলছে।
ফের প্রশ্নবিদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা
এই ঘটনায় ফের একবার রাজ্যের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিগত কয়েক মাসে একাধিক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঘটনা সামনে এসেছে। কিছুদিন আগেই এক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনায় সরব হয়েছিলেন শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। তাই কসবায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠেছে কলেজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার বিষয়টি। বিশেষত, কলেজ কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় প্রশাসনিক স্তরেও উদ্বেগ বেড়েছে।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তৎপরতা
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, কলেজের ভিতরে কোনও সিসিটিভি ফুটেজ সেই সময়কার পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হয়েছে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, সব কলেজে মহিলা নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নয়া গাইডলাইন তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি, রাজ্য মহিলা কমিশনের তরফেও ঘটনার উপর নজর রাখা হচ্ছে। কমিশনের এক সদস্য জানিয়েছেন, “ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রী মহল থেকে সাধারণ অভিভাবক, সকলেই। কসবা কলেজের এই ঘটনা ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল, শুধু আইন থাকলেই হয় না, বাস্তবের প্রয়োগই বড় কথা। পুলিশের তদন্তের পরবর্তী অগ্রগতি ও অভিযুক্তদের শাস্তির দিকেই এখন নজর সকলের।