TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

অশনি সংকেত ছিল… সূর্যাস্তের পর থেমে গেছিল জগন্নাথের রথ, তারপরেই ৪০ জনকে নিয়ে ছুটতে হলো হাসপাতালে

পুরীর রথযাত্রায় পদপিষ্ট হয়ে আহত অন্তত ৪০ জন ভক্ত। সূর্যাস্তের পর অচল রইল জগন্নাথের রথ। কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা? জানুন বিস্তারিত।

Debapriya Nandi Sarkar

রথযাত্রার ভিড়ে এবার ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে পড়ল পুরী শহর। হাজার হাজার পুণ্যার্থীর ভিড় আর বিশৃঙ্খলার মাঝে পদপিষ্ট হয়ে আহত অন্তত ৪০ জন। তারই মধ্যে অশনী সঙ্কেত— চলল না জগন্নাথের রথ! সূর্যাস্তের পর থেমে গেল নন্দীঘোষ রথ, তৈরি হল ধর্মীয় বিভ্রান্তি। ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীনাহার তথা রাজপ্রাসাদের কাছে, যখন জগন্নাথের “পাহাড়ি” অনুষ্ঠানের সময় প্রচণ্ড ভিড় জমায় সেখানে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রচণ্ড জনজোয়ার সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের। হঠাৎই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, বহু ভক্ত মাটিতে পড়ে যান, কেউ কেউ দমবন্ধ হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুরী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে আহতদের। পুরীর CDMO সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। কারও প্রাণহানি না ঘটলেও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

সূর্যাস্তের পর থেমে গেল জগন্নাথের রথ

অন্যদিকে, ঘটনার ভয়াবহতা ছাড়াও ধর্মীয় পরম্পরার দিক থেকেও পরিস্থিতি জটিল। সূর্যাস্তের পর জগন্নাথের রথ গড়ায় না, সেই নিয়ম অনুসারে, বিকেল ৫:৪৫-এর পরেও রথ না গড়ানোয় সঙ্কট দেখা দেয়। বলরাম ও সুভদ্রার রথ যদিও সামান্য এগোয়, নন্দীঘোষ রথ বসেই থাকে মন্দির প্রাঙ্গণে। মন্দির প্রশাসন জানিয়েছে, “ভিড় এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে রশি পরানোই সম্ভব হচ্ছিল না”। এই ঘটনায় গতবছরের ঘটনাও মনে করিয়ে দিচ্ছে অনেককেই। ২০২৪ সালের রথযাত্রাতেও ভিড়ে দমবন্ধ হয়ে এক পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার পর এবছর প্রশাসন “কড়া নিরাপত্তা”র দাবি করেছিল। কিন্তু বাস্তবে সেই ব্যবস্থা যে ফাঁপা প্রমাণিত, তা আরও একবার দেখিয়ে দিল এই বিপর্যয়। ঘটনার সময় বলরামের তালধ্বজ রথ গুন্ডিচা মন্দিরের দিকে টানা হচ্ছিল। সেই সময় হাজার হাজার পুণ্যার্থী একসাথে রশি ছোঁয়ার চেষ্টা করলে চরম হুড়োহুড়ির সৃষ্টি হয়। মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যেই থেমে যায় রথের গতি।

প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উঠল প্রশ্ন

ঘটনার পরে বিরোধীরা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, “লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম যেখানে প্রত্যাশিত, সেখানে পর্যাপ্ত ব্যারিকেড, প্রবেশ ও প্রস্থানের পৃথক পথের ব্যবস্থা কেন ছিল না?” পুরী জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পুরো ঘটনার ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, ও প্রয়োজনে দায়িত্বে থাকা কর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। রথযাত্রার বাকি দিনগুলিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হচ্ছে। এদিকে, রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যারা আজ পুরীতে ছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করে ঘটনার ভয়াবহতা তুলে ধরছেন। একজন আহত ভক্ত বলেন, “আমি রশি ছুঁতে গিয়েছিলাম, হঠাৎ চারপাশে চিৎকার আর ধাক্কাধাক্কি। পড়ে গিয়ে প্রাণ নিয়ে কোনওরকমে বেরিয়ে এসেছি। এত ভয় কোনওদিন পাইনি।”

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

প্রসঙ্গত, প্রতি বছর পুরীর রথযাত্রা শুধু ওড়িশা নয়, গোটা ভারতের একটি অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। কিন্তু এবছরের ঘটনাগুলি প্রমাণ করল— বিশ্বাস আর ভিড়ের মাঝে প্রশাসনিক প্রস্তুতি না থাকলে মুহূর্তে উৎসব হয়ে উঠতে পারে আতঙ্কের নাম।