কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরীহ ভারতীয়র মৃত্যুর পর ভারত চুপ ছিল না। প্রতিশোধ ছিল নিশ্চিত। আর সেটাই বাস্তবে রূপ পেল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ। পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে জইশ-ই-মহম্মদের একাধিক ঘাঁটিতে আঘাত হানে ভারতীয় বাহিনী। ওই হামলায় জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়—মারা যায় তার একাধিক আত্মীয়।
মাসুদের স্বীকারোক্তি: “হতাশ নই, বরং সুখপ্রাপ্তি”
ভারতের হামলায় নিজের পরিবারের মৃত্যু স্বীকার করেছেন মাসুদ আজহার নিজেই। এক বিবৃতিতে জানায়, তার বড় দিদি, জামাইবাবু, ভাগ্নে, ভাগ্নের স্ত্রী, এক ভাগ্নী ও পাঁচটি শিশু নিহত হয়েছে। সঙ্গে আরও চারজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মৃত্যুর কথাও সে স্বীকার করেছে।মাসুদের মন্তব্য আরও চমকে দেয়: “আমার পরিবারের ১০ জন একসঙ্গে সুখপ্রাপ্তি লাভ করেছে। কোনও আফশোস নেই। আমি শুধু ভাবছি, আমিও ওদের সঙ্গে যেতে পারতাম।”
বাহওয়ালপুরে ধ্বংস জামিয়া মসজিদ সুভান আল্লা
জইশের অন্যতম ঘাঁটি বাহওয়ালপুরের জামিয়া মসজিদ সুভান আল্লা। সেখানেই ছিল মাসুদের পরিবারের সদস্যরা ও ঘনিষ্ঠ জঙ্গি নেতারা। ভারতীয় সেনার হামলায় সেই ঘাঁটিটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। সূত্রের দাবি, সেই মসজিদেই অস্ত্র মজুত ও প্রশিক্ষণ চলত।
মাসুদের রক্তাক্ত অতীত
৫৬ বছরের মাসুদ আজহার জাতিসংঘের ঘোষিত আন্তর্জাতিক জঙ্গি। ভারতীয় পার্লামেন্ট (২০০১), মুম্বই হামলা (২০০৮), পাঠানকোট (২০১৬) ও পুলওয়ামা (২০১৯)-র মতো ভয়াবহ হামলার মাস্টারমাইন্ড সে। ভারত বারবার দাবি করে এসেছে—মাসুদ পাকিস্তানেই রয়েছে। যদিও পাকিস্তান সরকার বরাবরই সেই দাবি অস্বীকার করেছে।
মুক্তি পেয়েছিল IC-814 হাইজ্যাকের বিনিময়ে
১৯৯৪ সালে ভারত মাসুদকে গ্রেফতার করে। কিন্তু ১৯৯৯ সালে ভারতীয় বিমান IC-814 হাইজ্যাক হওয়ার পর, যাত্রীদের মুক্তির শর্তে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় ভারত সরকার। সেই থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অংশে তার নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ে।
‘অপারেশন সিন্দুর’: ২৫ মিনিটে ধ্বংস ৯টি ঘাঁটি
এই প্রতিশোধমূলক অভিযানে ভারত নিশানা করেছিল পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গিঘাঁটিকে। ক্ষেপণাস্ত্র ও স্মার্ট বোমায় ধ্বংস করা হয় সেগুলি। সব মিলিয়ে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় মাত্র ২৫ মিনিটে। নিহত হয়েছে ৭০-৮০ জন জঙ্গি।