রাজ্যের যাত্রীদের জন্য এল এক নতুন দিগন্তের সূচনা। আর সেই দিগন্তের নাম— অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্প। বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে এবার বাংলাও পেতে চলেছে নিজের প্রথম অমৃত ভারত স্টেশন। পশ্চিমবঙ্গে প্রথম অমৃত ভারত স্টেশন তৈরি হলো কল্যানী তে। কল্যাণী ঘোষপাড়া স্টেশন সেজে উঠলো নতুন প্রকল্পের হাত ধরে।
স্টেশনের বাইরে গর্ত, ভিতরে ভাঙাচোরা ছাউনি কিংবা বসার জায়গার সংকট—এই চিত্রটা এবার অতীত হতে চলেছে। অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পে কল্যানী ঘোষপাড়া স্টেশন তৈরি হয়েছে এক ঝাঁ চকচকে আধুনিক রেলস্টেশন, যেটা এক নজরে দেখলে চমকে যেতে হয়।
কবে হচ্ছে উদ্বোধন?
সূত্রের খবর অনুযায়ী, আগামী ২২ মে এই নতুন রূপে গড়ে ওঠা কল্যাণী ঘোষপাড়া স্টেশনের উদ্বোধন করবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে তিনি দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন এবং সেখান থেকেই এই পরিষেবার শুভ সূচনা করবেন। ইতিমধ্যেই রেল কর্তৃপক্ষ সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে।
স্টেশনের বদল কি শুধু রংতুলিতে?
একেবারেই না! বদল এসেছে পরিকাঠামোয়, যাত্রীসুবিধায়, এমনকি স্টেশনের গুরুত্বেও। অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় এখানে নির্মিত হয়েছে একেবারে নতুন ভবন, আরামদায়ক বিশ্রামাগার, উন্নতমানের ছাউনি। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শৌচাগার, প্রচুর বসার জায়গা ও পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে মনে করা হচ্ছে এবার থেকে যাত্রীদের যাত্রা হবে আরও স্বচ্ছন্দ, ঝামেলাহীন। শিয়ালদহ ডিভিশনের অধীনস্থ এই স্টেশনকে আধুনিকীকরণের কাজ রীতিমতো প্রশংসিত হয়েছে রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে।
শুধু স্টেশন নয়, শিক্ষার কেন্দ্রও এই জায়গা
কল্যাণী ঘোষপাড়া স্টেশন শুধু যাত্রী চলাচলের কেন্দ্র নয়, এটি এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা-এলাকার অংশও। এই স্টেশনের কাছেই রয়েছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। হাজার হাজার পড়ুয়া, শিক্ষক, কর্মচারীর প্রতিদিনের গন্তব্য এই স্টেশন। তাছাড়াও রয়েছে সতীমায়ের মেলা, দুর্গাপুজোর মতো জমায়েত কেন্দ্র, কল্যাণী আইটিআই মোড়—সব কিছুকে ঘিরেই এই স্টেশনের গুরুত্ব আলাদা। সেই কারণেই এর আধুনিকীকরণ ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
পরিদর্শনে শিয়ালদহ ডিআরএম, প্রস্তুতি সম্পূর্ণ
গত বৃহস্পতিবার কল্যাণী ঘোষপাড়া স্টেশনে যান শিয়ালদহ ডিভিশনের ডিআরএম রাজীব সাক্সেনা। তিনি জানান,“প্রকল্পের সমস্ত কাজ শেষ। এখন শুধুই উদ্বোধনের অপেক্ষা।”
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, এই স্টেশনই পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে প্রথম যেটি পুরোপুরি অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের আদলে তৈরি হয়েছে। দেশের মধ্যে ১২৭৫টি স্টেশনকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, আর সেই তালিকায় বাংলা থেকে কল্যাণী ঘোষপাড়া এখন গর্বের জায়গায়।
কিছু মুহূর্তের অপেক্ষা… তারপরই খুলে যাবে নতুন স্টেশনের দরজা
বহুদিনের পুরনো স্টেশনের গায়ে এবার আধুনিকতার রঙ। এমন উন্নত পরিকাঠামো, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও যাত্রীসেবার দিকে নজর রেখে তৈরি এই স্টেশন নিঃসন্দেহে রাজ্যের জন্য বড় প্রাপ্তি। আগামী ২২শে মে থেকে সাধারণ যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে এই স্টেশন!