TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

এক ব্যক্তি বদলে দিল ৮টি দেশের ভবিষ্যৎ! স্পার্ম ডোনার কাণ্ডে কাঁপছে ইউরোপ, বিস্তারিত পড়ুন

একজন স্পার্ম ডোনারের শরীরে ছিল বিরল ক্যানসার-সম্পর্কিত জিনের মিউটেশন। তার শুক্রাণু দিয়ে জন্মানো অন্তত ৬৭ শিশুর মধ্যে ১০ জন ইতিমধ্যেই ক্যানসারে আক্রান্ত—বাকিরা এখন সময়ের অপেক্ষা।

Debapriya Nandi Sarkar

২০০৮ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ডেনমার্কের একটি বেসরকারি স্পার্ম ব্যাংক থেকে একজন পুরুষের শুক্রাণু ব্যবহার করে ইউরোপের আটটি দেশে জন্ম হয় অন্তত ৬৭ শিশুর। শুরুতে কিছু বোঝা না গেলেও সময়ের সঙ্গে প্রকাশ্যে আসছে এক ভয়ঙ্কর সত্য। ওই ডোনারের শরীরে ছিল TP53 নামের একটি জিনের মিউটেশন—যা ‘Li-Fraumeni syndrome’-এর সঙ্গে জড়িত, এবং যেটি মানুষের শরীরে ক্যানসারের ঝুঁকি বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

১০ শিশু ইতিমধ্যেই আক্রান্ত, আরও ১৩ শিশু ঝুঁকিতে

ফ্রান্সের রুয়াঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী এদভিগ কাসপার বিষয়টি সামনে আনেন মিলানে অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ হিউম্যান জেনেটিকসের বার্ষিক সম্মেলনে। কাসপার জানান, এখন পর্যন্ত ওই ডোনারের শুক্রাণু থেকে জন্ম নেওয়া ১০ শিশু বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে ব্রেন টিউমার, লিউকেমিয়া, হজকিন ও নন-হজকিন লিম্ফোমার মতো রোগ।

আরও ১৩ শিশু একই জিন মিউটেশন বহন করে, যারা ভবিষ্যতে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের জন্য আজীবন স্ক্যান, এমআরআই, ও সঠিক নজরদারি চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

নিয়ম মেনেও কেন আটকানো গেল না?

যদিও ডোনারকে তখন একদম সুস্থ মনে হচ্ছিল এবং প্রচলিত জেনেটিক স্ক্রিনিংয়েও কিছু ধরা পড়েনি, তবু এমন ঘটনা ঘটল কীভাবে? ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংকের তরফে জানানো হয়েছে, তারা নিয়ম মেনেই কাজ করেছিল, এমনকি অতিরিক্ত স্ক্রিনিংও করানো হয়েছিল। কিন্তু মানবদেহের ২০ হাজার জিনের মধ্যে এমন কিছু থাকে যা আগে থেকে না জানলে খুঁজে বের করাই প্রায় অসম্ভব।

প্রশ্নের মুখে আন্তর্জাতিক নিয়ম, সীমাবদ্ধতা

এই ঘটনা আরও একবার সামনে এনে দিল আন্তর্জাতিক স্তরে স্পার্ম ডোনেশন সংক্রান্ত বিধিনিষেধের দুর্বলতা। বর্তমানে অনেক দেশে একটি ডোনারের দ্বারা কতজন শিশুর জন্ম হতে পারে তার কোনো আন্তর্জাতিক সীমা নেই। যদিও এখন ডেনমার্কের ইউরোপিয়ান স্পার্ম ব্যাংক নিজেদের পক্ষ থেকে ৭৫টি পরিবারের মধ্যে সীমা নির্ধারণ করেছে, তত দিনে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে।

পরিবারগুলোর দীর্ঘমেয়াদি লড়াই

যেসব পরিবার এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন, তাদের সন্তানদের এখন নিয়মিত এমআরআই, ব্রেন স্ক্যান এবং আলট্রাসাউন্ড করাতে হচ্ছে। অনেকের ক্ষেত্রেই এই আগাম নজরদারির ফলে রোগ দ্রুত ধরা পড়েছে, ফলে জীবন বাঁচানোর আশা জেগেছে। তবে আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি নেই।

এদভিগ কাসপারের দল এখন আক্রান্ত শিশুদের জন্য জেনেটিক কাউন্সেলিং চালু করার এবং আন্তর্জাতিক স্পার্ম ডোনেশন নীতিমালার পূর্ণ পর্যালোচনার দাবি জানিয়েছে।

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।