Iran Israel Conflict : মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে নতুন করে যুদ্ধের ছায়া। রবিবার ইজ়রায়েলের উদ্দেশে ছোড়া হয়েছে ইরানের অন্তত ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র, যার মধ্যে অন্যতম ছিল অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ‘খাইবার শেকান’। ইরান দাবি করেছে, এই মিসাইল ইজ়রায়েলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের নজর এড়িয়ে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে পারে। প্রশ্ন উঠছে—এই মিসাইল সত্যিই কতটা ভয়ংকর? আর ইজ়রায়েলের ‘আয়রন ডোম’ আদৌ কি সফলভাবে আটকাতে পারবে এই আক্রমণ?
‘খাইবার শেকান’: প্রযুক্তিগত শক্তি
‘খাইবার শেকান’ (Kheibar Shekan) ইরানের তৈরি একটি তৃতীয় প্রজন্মের ব্যালিস্টিক মিসাইল, যা মোবাইল লঞ্চার থেকে ছোঁড়া যায়। এই মিসাইলের সর্বোচ্চ পাল্লা প্রায় ১,৪৫০ কিলোমিটার। এটি একসাথে উচ্চগতিসম্পন্ন ও রাডার-এভেডিং ডিজাইনের জন্য পরিচিত। ইরানের দাবি অনুযায়ী, মহাকাশে এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯,৫০০ কিলোমিটার এবং বায়ুমণ্ডলে নামার সময় প্রায় ৯,৮০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
এই ক্ষেপণাস্ত্র স্যাটেলাইট-নির্দেশিত ওয়ারহেড নিয়ে তৈরি, যার ওজন প্রায় ৫৫০ কেজি। এটিকে ‘Ghost Missile’ বলা হচ্ছে, কারণ এটি রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম। ফলে, ‘আয়রন ডোম’ বা ‘প্যাট্রিয়ট’-এর মতো এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের জন্য এটি অনেক সময় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
ইজরায়েলের প্রতিক্রিয়া ও প্রতিরক্ষা
ইজ়রায়েলের তরফে এখনও পর্যন্ত ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ জানানো হয়নি। তবে সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের এই মিসাইল প্রযুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্যকে নতুনভাবে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। ‘খাইবার শেকান’-এর মত মিসাইল যদি নিয়মিত ব্যবহৃত হয়, তাহলে ইজ়রায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়বে। আয়রন ডোম সফলভাবে অনেক ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে পারলেও, হাই-ভেলোসিটি ও রাডার এভেডিং মিসাইলের ক্ষেত্রে এটি কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়েই এখন সংশয় তৈরি হয়েছে।
কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ
এই মিসাইল হামলার সময়োপযোগিতা এবং আকার বলছে, ইরান কেবল সামরিকভাবে নয়, কূটনৈতিকভাবেও একটি বার্তা দিতে চাইছে—তারা এখন শুধু প্রতিরক্ষায় নয়, আক্রমণাত্মক প্রযুক্তিতেও সক্ষম। ফলে, এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মহলের নজর ইরান-ইজ়রায়েল সম্পর্কের পরবর্তী গতিপথে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা যদি বাড়তে থাকে, তবে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্ব রাজনীতির ভারসাম্য পাল্টে যেতে পারে। আর তার মধ্যে ভারতও যে প্রভাবিত হবে না, এমন বলা মুশকিল।