বিশ্ব রাজনীতিতে বড়সড় উদ্বেগের ইঙ্গিত মিলেছে আমেরিকার ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (DIA) ২০২৫ সালের Worldwide Threat Assessment রিপোর্টে। ওই প্রতিবেদনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, পাকিস্তান এখন Weapons of Mass Destruction (WMD) বা গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির উপযোগী জিনিসপত্র বিদেশি উৎস, বিশেষ করে চীন থেকে আমদানি করছে। এমনকি এইসব উপকরণ হংকং, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশ ঘুরে ইসলামাবাদে ঢুকছে বলেও রিপোর্টে দাবি।
ভারতকে ‘অস্তিত্বের শত্রু’ বলে মানে পাকিস্তান!
রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তান তার পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডারকে ‘আধুনিক’ করার কাজে লেগে পড়েছে। ইসলামাবাদের মতে, ভারত তাদের “অস্তিত্বের হুমকি”— আর সেই কারণে তারা ভারতের সামরিক শক্তির মোকাবিলায় ব্যাটলফিল্ড নিউক্লিয়ার অস্ত্র তৈরির পথেই হাঁটছে। এও বলা হয়েছে, পাকিস্তানের মিলিটারি এখনো সীমান্তে সংঘর্ষ, তেহরিক-ই-তালিবান ও বালোচ জঙ্গি হামলা এবং পরমাণু উন্নয়ন—এই চারটি বিষয়ে একসঙ্গে মন দিচ্ছে।
পিছনে চীন, সামনে ভারত—দুই দিকেই উত্তেজনা
রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের WMD প্রোগ্রামের পেছনে স্পষ্টভাবে চীনের সহায়তা রয়েছে। শুধু তাই নয়, চিনা প্রযুক্তি ও উপকরণ ব্যবহার করে পাকিস্তান দ্রুতগতিতে পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার বাড়াচ্ছে। যদিও, CPEC (চীন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডর) প্রকল্পে নিযুক্ত চিনাদের ওপর জঙ্গি হামলা, বিশেষ করে ২০২৪ সালে ৭ জন চিনা নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনার ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা ‘চাপের মুখে’ আছে বলেই রিপোর্টে ইঙ্গিত।
ভারতের প্রতিক্রিয়া কী?
ভারতের ক্ষেত্রে রিপোর্টে বলা হয়েছে, চীনকে প্রধান শত্রু হিসেবে দেখে দিল্লি, আর পাকিস্তানকে সামলানোর মতো একটি পার্শ্ব নিরাপত্তাজনিত সমস্যা হিসেবে দেখে। এই কারণে ভারত বর্তমানে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি বাড়াতে চাইছে—বিশ্ব নেতৃত্বে নিজের জায়গা পাকা করার লক্ষ্যেই এই কৌশল।
এই রিপোর্ট সামনে আসার পর দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি যে আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে, তা বলাই যায়। পাকিস্তান যেখানে চীনের ছত্রছায়ায় পরমাণু অস্ত্রে ঝুঁকছে, সেখানে ভারত একদিকে চীনের প্রতিপত্তি রুখতে এবং অন্যদিকে নিজের কৌশলগত প্রভাব বাড়াতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় জোর দিচ্ছে।