যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া স্মার্টফোন যদি দেশটির ভেতরে তৈরি না হয়, তবে তা আমদানি করতে দিতে হবে ২৫ শতাংশ শুল্ক—এমনই চমকপ্রদ ঘোষণা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২৪ মে, ২০২৫-এ দেওয়া এই ঘোষণার পরই প্রযুক্তি জগতে ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে।
ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রধান লক্ষ্য হলো মার্কিন উৎপাদনশীলতাকে উৎসাহ দেওয়া এবং বিদেশি উৎপাদনের উপর নির্ভরশীলতা কমানো। তবে সরাসরি এই নির্দেশের আওতায় চলে এসেছে অ্যাপল, যারা ইতিমধ্যেই ভারতে আইফোন উৎপাদন শুরু করেছে। বর্তমানে প্রায় ২০ শতাংশ আইফোন ভারতে তৈরি হচ্ছে।
গুনতে হবে ২৫ শতাংশ শুল্ক
প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়েছেন, বিদেশে কারখানা স্থাপন করতেই পারে যে কেউ, কিন্তু সেই পণ্যের বিক্রি যদি মার্কিন বাজারে হয়, তবে তা আমেরিকার মাটিতে তৈরি হতে হবে—নয়তো গুনতে হবে ২৫ শতাংশ শুল্ক। অ্যাপলের পাশাপাশি স্যামসাং-এর মতো অন্যান্য বড় সংস্থার প্রতিও একই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই শেয়ার বাজারে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অ্যাপলের শেয়ার মূল্য এক লাফে কমে যায় ২.৬ শতাংশ, যার ফলে কোম্পানিটির প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্য উবে যায়।
উৎপাদন খরচ বাড়বে
বিশ্লেষকদের ধারণা, যদি অ্যাপল পুরোপুরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন তৈরি করতে বাধ্য হয়, তাহলে উৎপাদন খরচ এতটাই বাড়বে যে একটি আইফোনের দাম বেড়ে দাঁড়াতে পারে প্রায় ৩৫০০ ডলার, যেখানে বর্তমানে আইফোনের প্রাথমিক মডেল পাওয়া যায় ৭৯৯ ডলারে। এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র অ্যাপল বা স্যামসাং-এর জন্য নয়, বরং বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি ও সরবরাহ শৃঙ্খলকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মত অর্থনীতিবিদদের। কারণ, এত বড় পরিসরে উৎপাদন স্থানান্তর করতে হলে দরকার বিশাল অবকাঠামো এবং দক্ষ জনবল—যা রাতারাতি সম্ভব নয়। ফলে অনেক সংস্থাকেই আবার নতুন করে উৎপাদন কৌশল সাজাতে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই শুল্ক নীতি একদিকে যেমন মার্কিন নির্মাণ শিল্পকে নতুন করে চাঙ্গা করতে পারে, অন্যদিকে তেমনই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তৈরি হতে পারে নতুন টানাপোড়েন। কোন পথে হাঁটবে প্রযুক্তি জগত—তা বলবে সময়।