রান্নার তেল কি নিরাপদ? বাজারের বোতলে লেখা ব্র্যান্ড নামের আড়ালে যে কী ভয়ঙ্কর চক্রান্ত লুকিয়ে থাকতে পারে, তা ফের সামনে এল শ্রীরামপুরে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার লিটার ভেজাল তেল উদ্ধার করল পুলিশ। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চন্দননগর ইনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের হানা
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ইনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা শ্রীরামপুর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই শহরের একটি গুদামে হানা দেন। ওই গুদামে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক ড্রামে ভরা তেল। সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তৎক্ষণাৎ পরীক্ষা করা হয় এবং দেখা যায়, সেগুলি ভোজ্য তেলের নামে বিক্রি হওয়া ভেজাল পদার্থ।
তেলের গন্ধেই ফাঁস হল কারবার!
সূত্রের খবর, গুদামে রাখা ড্রাম খুলতেই এক ধরনের তীব্র গন্ধে সন্দেহ হয় আধিকারিকদের। পরে সেগুলি রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, তেলের সঙ্গে মেশানো ছিল পেট্রোলিয়াম বেসড কিছু রাসায়নিক উপাদান, যা মানবদেহের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।
গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি, তদন্তে আরও তথ্যের খোঁজ
এই ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা দীর্ঘদিন ধরেই এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত এবং বিভিন্ন এলাকায় পাইকারি দরে ভেজাল তেল সরবরাহ করত। এদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, এর পেছনে রয়েছে একটি বড়সড় চক্র, যা শুধুমাত্র শ্রীরামপুর নয়, আশপাশের জেলাতেও সক্রিয়।
তদন্তে নতুন দিশা, নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ এখন সেই বড় চক্রের খোঁজে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বেশ কিছু ছোট ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট এই ভেজাল তেল নিয়ে থাকে, যেগুলি স্থানীয় বাজারে রান্নার তেলের নামে বিক্রি হয়। ফলে সরাসরি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা ও প্রশাসনের নজরদারি জরুরি
এই ঘটনার পর স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে আরও কড়া নজরদারির কথা বলা হয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, “এভাবে সাধারণ মানুষের অজান্তে খাদ্যে বিষ মেশানো হচ্ছে, যা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। নিয়মিতভাবে বাজার তদারকি বাড়ানো হবে।”