রবিবার দুপুরে comparatively ফাঁকা ডানকুনি স্টেশন। প্ল্যাটফর্মে নিত্যযাত্রীদের তেমন ভিড় নেই। এরই মাঝে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। হঠাৎ স্টেশনের ওভারব্রিজ থেকে নিচে ঝাঁপ দেন এক ব্যক্তি। পড়ে যান রেলের হাইভোল্টেজ বৈদ্যুতিক তারের উপর। মুহূর্তেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়েন লোকাল ট্রেনের ছাদে। মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। দেহ শনাক্তের পর জানা যায়, মৃতের নাম শেখ মারুফ। বয়স আনুমানিক চল্লিশ। ডানকুনির মৃগালা ছাউনিপাড়া এলাকায় তাঁর বাড়ি। স্থানীয় বাজারে তাঁর মুরগির দোকান ছিল। পেশায় তিনি একজন ছোট ব্যবসায়ী। আত্মীয়-পরিজনের দাবি, মারুফ মানসিকভাবে কিছুটা অবসাদগ্রস্ত ছিলেন, কিন্তু এমন পরিণতির আশঙ্কা কেউ করেননি।
কীভাবে ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা?
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ শেখ মারুফকে ডানকুনি স্টেশনের ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তখনই হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লোকাল ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকছিল। হঠাৎ ওভারব্রিজ থেকে ঝাঁপ দেন মারুফ। তিনি সোজা গিয়ে পড়েন লাইনের উপর দিয়ে চলা হাইভোল্টেজ তারে। মুহূর্তের মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁর শরীরে আগুন ধরে যায়। পরে তিনি ছিটকে গিয়ে পড়েন ট্রেনের ছাদে। দেহ ট্রেনের ছাদেই আটকে যায়, শরীরের একাধিক অংশ পুড়ে যায়। ঘটনাটি চোখের সামনে ঘটতে দেখে আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে যান যাত্রীরা। ট্রেন থেমে গেলেও ছাদে থাকা দেহ দেখে অনেকেই ভয়ে চিৎকার করে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় জিআরপি ও ডানকুনি থানায়। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ ও রেল কর্মীরা এসে দেহ উদ্ধার করেন।
আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা?
দেহ নামানোর পরই পরীক্ষা করে দেখা যায়, শেখ মারুফ মারা গিয়েছেন। তাঁর দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে। ঘটনাটির ফলে কিছু সময়ের জন্য রেল চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। এখন প্রশ্ন—এটা কি আত্মহত্যা, নাকি কোনো মানসিক সমস্যা থেকে উদ্ভূত আচরণ? বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রেল পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যাতে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যায়।
ডানকুনি স্টেশনে রবিবারের দুপুরে এই ঘটনাটি কেবল একটি মৃত্যু নয়, বরং প্রশ্ন তুলে দিল রেলওয়ে নিরাপত্তা, মানসিক স্বাস্থ্য ও জনসচেতনতা নিয়ে। আত্মহত্যা হোক বা দুর্ঘটনা—এ ধরনের ট্র্যাজেডি যেন আর না ঘটে, সেটাই কাম্য।