Mid-day Meal Controvercy : পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাঙ্গনে ফের রাজনৈতিক বিতর্কের আগুন ছড়াল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এক মন্তব্য ঘিরে। হালাল মাংস নিয়ে মিড-ডে মিল বিতরণে বাধা সৃষ্টি হয়েছে—এই অভিযোগ তুলে তিনি দাবি করেছেন, রাজ্যের কিছু স্কুলে মুসলিম অভিভাবকরা খাবারে নির্দিষ্ট ধর্মীয় পদ্ধতি মানার দাবিতে সরব হয়েছেন। আর সেই কারণেই কিছু বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শুভেন্দুর অভিযোগ অনুযায়ী, “কিছু এলাকায় মুসলিম অভিভাবকরা মিড-ডে মিলের রান্নায় হালাল মাংস চেয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘হালাল ছাড়া মাংস চলবে না’। ফলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলির প্রধানরা বিতরণে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।” এই দাবি নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে। তিনি আরও বলেন, “এখানে মন্দিরের কথা বললে বলা হয় ওটা ভাস্কর্য, কিন্তু মিড-ডে মিলের রান্নায় ধর্মীয় বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্রে ধর্মের প্রবেশ ভয়ঙ্কর।” তাঁর বক্তব্য, এর ফলে ধর্মকে সামনে রেখে শিক্ষার পরিবেশে বিভাজন তৈরি হচ্ছে।
কী বলছেন শিক্ষা মহলের প্রতিনিধিরা?
রাজ্যের শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, মিড-ডে মিল মূলত পুষ্টির লক্ষ্যে চালু একটি জাতীয় প্রকল্প। সেখানে ধর্মীয় বিধি অনুসারে রান্না বা উপাদান বাছাইয়ের দাবি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। তবে সরকারি স্তরে এই বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। শিক্ষা দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “স্কুলে খাবার বিতরণ বন্ধ রাখার কোনও সরকারি নির্দেশ নেই। কিছু জায়গায় যদি সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে, তা স্থানীয় স্তরে আলোচনার মাধ্যমে মেটানো উচিত।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা শুভেন্দুর এই মন্তব্যকে ‘উস্কানিমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এমন বক্তব্য শুধুমাত্র সম্প্রদায়গত বিভাজন তৈরির জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে। একজন তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধর্মীয় মঞ্চ বানাতে চায় বিজেপি। শুভেন্দুর মন্তব্যের মাধ্যমে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।”
সংবেদনশীলতা বনাম বাস্তবতা
বর্তমান পরিস্থিতিতে স্কুলে মিড-ডে মিল বিতরণ বন্ধ হওয়া এবং তা ঘিরে ধর্মীয় রঙ লাগানোর অভিযোগ রাজ্যের সামাজিক পরিসরে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকেরা। সামগ্রিকভাবে, এই ইস্যুতে রাজনীতির মঞ্চ যেমন উত্তপ্ত, তেমনই স্কুলপড়ুয়াদের স্বাভাবিক পুষ্টি-সংক্রান্ত সেবাও বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।