চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিকাশ ভবনের সামনে টানা ১২ দিন ধরে আন্দোলনে বসে আছেন। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার পুলিশের লাঠিচার্জে রক্তাক্ত হয়েছেন বহু শিক্ষক, কারও হাত ভেঙেছে, কারও পা। সেই ঘটনার পরপরই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ১৫টি ধারায় মামলা রুজু করেছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ, যার মধ্যে রয়েছে জামিন অযোগ্য ধারাও।
পুলিশের তরফে এবার নোটিস পাঠিয়ে জানানো হয়েছে—এক এক জনকে আলাদা দিনে থানায় হাজির হতে হবে। সোমবার, বুধবার—দিন ভাগ করে ডাকা হয়েছে আন্দোলনকারীদের। স্পষ্ট বলা হয়েছে, হাজিরা না দিলে গ্রেফতার করা হতে পারে।
‘চাপে ফেলতেই এই পদক্ষেপ’, অভিযোগ আন্দোলনকারীদের
আন্দোলনকারী মেহবুব মণ্ডল বলেন, “আমরা যাতে আর আন্দোলন না করি, তাই ভয় দেখাতে এই নোটিস। হাজিরা দিলেও কি গ্রেফতার হবে না, তার তো কোনো গ্যারান্টি নেই!” তাঁর আরও দাবি, “সরকার আমাদের সরকারি কর্মী বলে মানতেই চায় না। বরং সরকারি কর্মীদের ঢাল করে আমাদেরই নিশানা করছে।”
পুলিশি মার, উল্টে শিক্ষকদের বিরুদ্ধেই মামলা!
বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনের সামনে চলছিল অবস্থান বিক্ষোভ। তখনই পুলিশ হঠাৎ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। অনেক শিক্ষকের শরীর থেকে রক্ত ঝরেছে, আহত হয়েছেন নারী শিক্ষিকারাও। অথচ সেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং কর্তব্যরত পুলিশকে বাধা দেওয়ার। পুলিশি মামলায় হুমকি, হামলার ধারাও যোগ করা হয়েছে।
মাটিতে বসেই লড়াই, হাতে ঝাঁটা তুলে রাস্তা পরিষ্কার
রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাত্রিব্যাপী অবস্থান করে বিক্ষোভে অনড় আছেন চাকরি হারানো শিক্ষকরা। কেউ মাথায় ব্যান্ডেজ, কেউ কাটা হাতে বসে আছেন ব্যানার নিয়ে। শুধু দাবি একটাই—চাকরি ফেরত চাই। এমনকী, রাস্তা পরিষ্কারের দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। কেউ বলছেন, “চক-ডাস্টার ছিল হাতে, আজ হাতে ঝাঁটা। যতদিন না দাবি মানা হচ্ছে, ততদিন লড়াই চলবে।”
বিকাশ ভবনের চারপাশে কড়া নিরাপত্তা
আন্দোলনের জেরে বিকাশ ভবন চত্বরজুড়ে পুলিশ মোতায়েন। প্রতিটি কোণ পাহারায়, ক্যামেরায় নজরদারি চলছে। তবে এত কিছু সত্ত্বেও শিক্ষকরা বলছেন—”এ লড়াই শুধু চাকরির জন্য নয়, এটা আমাদের সম্মানের লড়াই।”