Malda Child Suicide : শুধু একটি মোবাইল চেয়েছিল সে। আবদার রাখেননি বাবা। আর সেই অভিমানে মাত্র ৯ বছরের এক শিশু নিজের জীবনের যবনিকা টেনে দিল। মালদার রতুয়া-২ ব্লকের শ্রীপুর শম্ভুপুর এলাকায় এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোক ও চমকে স্তব্ধ গোটা এলাকা। নিহত শিশুর নাম শাহ জামাল। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বাবার কাছে সে একটি মোবাইল ফোন চেয়েছিল। কিন্তু বয়সের কথা মাথায় রেখে তার বাবা মোবাইল দেওয়ার সেই অনুরোধ অস্বীকার করেন। এরপরই অভিমানে ঘরের ভিতরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় জামাল। শিশুটিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চমকে ওঠে পরিবার। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
তদন্তে নেমেছে পুলিশ
ঘটনাস্থলে পৌঁছে রতুয়া থানার পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। মৃতদেহের পাশে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে এবং পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শিশুটির বয়সের কথা মাথায় রেখে তদন্ত অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। এমন মর্মান্তিক পরিণতি নিয়ে দিশেহারা পরিবার ও প্রতিবেশীরা। সকলেই একবাক্যে বলছেন—‘‘এতটুকু ছেলে যে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, ভাবতেই পারছি না।’’
আগেও ঘটেছে এমন ঘটনা
এই প্রথম নয়। রাজ্যের অন্যত্র এর আগেও মোবাইল না পেয়ে শিশুদের আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। উত্তর দিনাজপুরে এক কিশোর এবং হাওড়ায় এক কিশোরী একই কারণে জীবন শেষ করেছে বলে জানা গিয়েছে। মনোবিদদের মতে, প্রযুক্তি-নির্ভরতার এই যুগে শিশুদের চাহিদা, মানসিক চাপ ও হতাশাকে গুরুত্ব না দিলে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে।
অভিভাবকদের জন্য বার্তা
শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানো, তাদের অনুভূতি বোঝা ও মোবাইল ব্যবহার সম্পর্কে স্পষ্ট দিকনির্দেশ দেওয়া এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সন্তানের আবেগ বা প্রতিক্রিয়ার প্রতি সংবেদনশীলতা না থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হতে পারে।