এক নারকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল মালদার কুশিদা গ্রাম। জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদের জেরে শুক্রবার রাতে এক গৃহবধূ ও তাঁর স্বামীর উপর বর্বর হামলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের আঙুল উঠেছে স্থানীয় এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, আক্রান্ত নারীর অভিযোগ, তাঁকে ঘরের মধ্যে অর্ধনগ্ন করে মারধর করা হয়েছে। গুরুতর জখম অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।
জমির জেরে গৃহে হানা
জানা গিয়েছে, কুশিদা গ্রামের বাসিন্দা এক দম্পতির সঙ্গে প্রতিবেশীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। অভিযোগ, শুক্রবার সেই বিবাদের জেরে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল কাইয়ুমের নেতৃত্বে একদল লোক তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়। ঘরের মধ্যে ঢুকে প্রথমে মহিলার স্বামীকে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়। এরপর ওই গৃহবধূকে টেনে হিঁচড়ে এনে অর্ধনগ্ন করে নির্মমভাবে মারধর করা হয় বলে দাবি পরিবারের।
আহতদের হাসপাতালে স্থানান্তর
প্রথমে আহতদের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, গৃহবধূর শরীরে বেশ কিছু জায়গায় গভীর আঘাত রয়েছে এবং চোখের কাছাকাছি ছুরির কোপের দাগও লক্ষ্য করা গেছে।
নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন আক্রান্ত পরিবার
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরও আক্রান্ত দম্পতি বাড়ি ফিরে যেতে পারছেন না। তাঁদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা এলাকায় রীতিমতো ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছেন। থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও আক্রান্তরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
রাজনৈতিক তরজায় ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা
যদিও সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল কাইয়ুমের দাবি, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চক্রান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘আমার জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক অবস্থানকে আঘাত করার জন্যই এই নাটক সাজানো হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, তাঁর কোনও অনুগামী বা তিনি নিজে এমন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন। এদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে গৃহবধূ ও তাঁর স্বামীর অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনার দিন আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।