West Bengal Politics : সৈকতে ভেসে আসা ঢেউয়ের গর্জনের মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর অন্য রূপ ধরা পড়ল দীঘায়। কখনও তিনি বানরকে বিস্কুট খাওয়াচ্ছেন, কখনও আবার পথচলতি মানুষকে কাছে টেনে নিচ্ছেন কথা বলার জন্য। কিন্তু এই সফরের মাঝেই উঠে এল রাজনৈতিক বার্তা—ভোটার তালিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ।
রথযাত্রার আগে দীঘা সফর
রথযাত্রার আগে প্রথমবার দীঘায় তিন দিনের সফরে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরে আসার পর তাঁর সফর শুরু হয় রাধামণি, নন্দকুমার, বাজকুল, হরিয়া হয়ে দীঘার দিকে। পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষকে সম্ভাষণ জানান মুখ্যমন্ত্রী। কোনও জায়গায় গাড়ি থামিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথাও বলেন।
সৈকতে ভিন্ন মেজাজে মুখ্যমন্ত্রী
সন্ধ্যায় দীঘার সৈকতে ঘুরতে বের হন মমতা। সেখানে তাঁর হাতে দেখা যায় বিস্কুটের প্যাকেট, যা তিনি নিজে হাতে খাওয়ান সৈকতের এক ঝাঁক বানরকে। এ দৃশ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে সম্পূর্ণ সাধারণ এক পর্যটকের মতো ঘুরে বেড়াতে।
ভোটার তালিকা নিয়ে উদ্বেগ
এই সফরের মাঝেই এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানান, “অনেকে যাঁরা এখানকার বাসিন্দা নন, তাঁদের নামও ভোটার তালিকায় ঢুকেছে। এর ফলে স্থানীয় ভোটাররা বঞ্চিত হতে পারেন।” তিনি এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান বলেও জানান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়ায়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, বহিরাগত ভোটারদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ভোটে প্রভাব ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। প্রশাসনিক স্তরে এই অভিযোগের কী প্রতিক্রিয়া হয়, এখন সেই দিকেই নজর।
পাল্টা প্রতিক্রিয়া শুভেন্দুর
এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, “It’s fear psychosis”—অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী আসলে ভয় পাওয়ার রাজনীতি করছেন। তাঁর মতে, প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতে এই ধরনের অভিযোগ করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রথযাত্রা ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি
রথযাত্রার জন্য দীঘা ইতিমধ্যেই সাজো সাজো রব। প্রায় ২ লক্ষ দর্শনার্থী শহরে আসবেন বলে অনুমান। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও সেই অনুযায়ী জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনিক মহল থেকে শুরু করে স্থানীয় হোটেল ও পরিবহণ পরিষেবাও একযোগে কাজ করছে পর্যটকদের সুবিধার জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর যেমন সাংস্কৃতিক ও ব্যক্তিগত মুহূর্তে ভরপুর, তেমনই তার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক সতর্কবার্তা। আসন্ন নির্বাচনের আগে এই সফরের তাৎপর্য যে শুধু উৎসব দেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, তা পরিষ্কার তাঁর বক্তব্যেই।