TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

NRC in Bengal : ‘গোপনে এনআরসি’? নির্বাচন কমিশনে্ল ‘ঘাপলা’ ধরলেন মমতা

নতুন ভোটার তালিকা সংশোধনের নিয়ম ঘিরে নির্বাচন কমিশনকে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, এই নিয়ম গোপনে এনআরসি চালুর প্রচেষ্টা এবং প্রান্তিক ভোটারদের বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র।

Debapriya Nandi Sarkar

NRC in Bengal : এক নির্দেশেই চাঞ্চল্য রাজ্য রাজনীতিতে। ভোটার তালিকা সংশোধনের নতুন নিয়ম ঘিরে নির্বাচন কমিশনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, এই নিয়মের আড়ালে আসলে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী শাসিত রাজ্যে ‘গোপনে এনআরসি’ চালু করার চক্রান্ত চলছে। বিশেষ করে রাজ্যের দরিদ্র, পরিযায়ী শ্রমিক এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষকে নিশানা করা হচ্ছে বলেই তাঁর আশঙ্কা।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

নতুন নিয়ম ঘিরে কী বলছে কমিশন?

নির্বাচন কমিশনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যাঁরা ১ জুলাই ১৯৮৭ থেকে ১ ডিসেম্বর ২০০৪-এর মধ্যে জন্মেছেন, তাঁদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য একাধিক নথি জমা দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে নিজের জন্মের প্রমাণপত্র, পিতামাতার নাগরিকত্ব সংক্রান্ত কাগজ এবং একটি স্বঘোষণাপত্র। নির্বাচন কমিশনের মতে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হল ভোটার তালিকাকে আরও সঠিক ও স্বচ্ছ করা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই যুক্তিকে মানতে নারাজ।

মুখ্যমন্ত্রীর তোপ

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশিকাকে “গোপন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “এই নিয়মের মাধ্যমে রাজ্যের বিপুল সংখ্যক দরিদ্র, গ্রামীণ ও প্রান্তিক মানুষকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার রাস্তা তৈরি হচ্ছে। এগুলো আসলে বিজেপির ইশারা মেনে কমিশনের গৃহীত পদক্ষেপ।” তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই নিয়মের ফলে যাঁদের নাম কাটা পড়বে, তাঁদের বিরুদ্ধে নাগরিকত্ব নিয়ে তদন্ত হতে পারে, এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে আটক বা হয়রানির ঘটনাও ঘটতে পারে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

নজরে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন ভোটের আগে এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের সুবিধার্থে কাজ করছে। যদিও কমিশনের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

বিরোধীদের সতর্ক থাকার বার্তা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সব বিরোধী দল এবং গণতান্ত্রিক সংগঠনকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “এটা শুধু ভোটার তালিকার বিষয় নয়, এটা গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার রক্ষার লড়াই।” তিনি পরোক্ষে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এইভাবে যদি একে একে মানুষকে বাদ দেওয়া হয়, তা হলে এক সময় দেখা যাবে বহু প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক ভোটাধিকার হারিয়ে ফেলেছেন।”

ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বহু মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, এত বছর পর হঠাৎ কেন এই নথির প্রয়োজন পড়ল? অনেকেই আবার ভয়ে আছেন—বিশেষ করে যাঁদের কাছে বাবা-মায়ের কাগজপত্র নেই বা যাঁরা অন্য রাজ্য থেকে এসেছেন। রাজনীতির ময়দানে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন নতুন নয়। তবে ভোটার তালিকা সংশোধনের এই নতুন নিয়ম ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে বিতর্ক ও রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। আগামী দিনে এই নিয়ে আরও সংঘাত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।