TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

স্কুল তহবিল কেলেঙ্কারিতে উত্তাল খাসবাড়, জাল স্বাক্ষর করে টাকা তোলার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

পশ্চিম মেদিনীপুরের খাসবাড় হাই স্কুলে মিড-ডে মিল ও স্কুল তহবিল থেকে জাল স্বাক্ষরে টাকা তোলার অভিযোগে উত্তাল এলাকা। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে FIR, তদন্তে নেমেছে প্রশাসন।

Debapriya Nandi Sarkar

পশ্চিম মেদিনীপুরের খাসবাড় হাই স্কুলে আচমকা দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় পড়েছে গোটা শিক্ষা মহলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবপ্রসাদ মিদ্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি টানা আট মাস স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও মিড-ডে মিল, ভোকেশনাল ও উন্নয়ন তহবিল থেকে জাল স্বাক্ষরে লক্ষাধিক টাকা তুলে নিয়েছেন।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

অভিযোগ ও বিক্ষোভ

বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভাপতি উত্তম পাত্র অভিযোগ জানান, দেবপ্রসাদবাবু শুধু দীর্ঘদিন স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন না, সেই সময়েও তিনি স্কুলের নাম করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলেন। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর স্বাক্ষর নকল করে বা পুরনো স্বাক্ষর ব্যবহার করে এই টাকা তোলা হয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। একদল অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দা সোমবার স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তারা প্রশ্ন তোলেন, একজন শিক্ষক যিনি স্কুলে আসেন না, তিনি কীভাবে প্রশাসনিক কার্যকলাপ চালান ও অর্থ তুলতে পারেন?

প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও তদন্ত শুরু

ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কেশপুর থানার পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। স্কুল পরিদর্শনে আসেন জয়েন্ট বিডিও বৈদ্যনাথ হেমব্রম। তিনি জানান, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং স্কুলের সমস্ত নথি খতিয়ে দেখা হবে। পরিচালন কমিটির সভাপতির পক্ষ থেকে কেশপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই ভিত্তিতে শুরু হয়েছে প্রাথমিক তদন্ত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

অভিযুক্তের সাফাই ও চিকিৎসার দাবিও

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক দেবপ্রসাদ মিদ্যার পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, তিনি গত কয়েক মাস ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং মেডিক্যাল ছুটিতে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী জানান, স্বামী কলকাতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং ব্যাংক সংক্রান্ত কার্যকলাপ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।তবে বিদ্যালয়ের সভাপতি বলেন, দেবপ্রসাদবাবুকে এর আগেও একবার দুর্নীতির কারণে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। প্রায় পাঁচ বছর পরে আবার স্কুলে ফিরে এসে তিনি আগের মতোই দুর্নীতির পথে হাঁটতে শুরু করেন।

প্রশ্ন উঠছে স্কুলের স্বচ্ছতা নিয়ে

এই ঘটনাকে ঘিরে বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে স্কুল প্রশাসনের স্বচ্ছতা এবং তদারকি নিয়ে। অনেকেই বলছেন, একজন প্রধান শিক্ষক স্কুলে না থেকেও কীভাবে প্রশাসনিক কার্যকলাপ চালাতে পারেন, তা খতিয়ে দেখা উচিত। শুধু প্রধান শিক্ষক নয়, স্কুলের অন্যান্য কর্মচারী এবং পরিচালন সমিতির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকেরা।

স্কুল মানেই শিক্ষার আলো ছড়ানোর স্থান। সেই স্থানে যদি আর্থিক দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা চলে, তবে তার প্রভাব পড়ে আগামী প্রজন্মের উপর। খাসবাড় হাই স্কুলের ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ আশা জাগালেও, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি না হলে ছাত্রছাত্রীদের আস্থা হারিয়ে যেতে পারে প্রতিষ্ঠান থেকে। এই মুহূর্তে প্রয়োজন পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত।