পুরুলিয়া থেকে হাওড়া যাত্রাপথ এবার আরও সরল ও সময়বাঁচানো। এক নতুন মেমু (MEMU) লোকাল ট্রেন চালু হল, যা বাঁকুড়া ও মসাগ্রাম হয়ে পৌঁছে যাবে হাওড়ায়। শনিবার, ২৮ জুন, রেলমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নতুন ট্রেন পরিষেবার উদ্বোধন করেন। দীর্ঘদিনের দাবি অবশেষে বাস্তবায়িত হওয়ায় খুশি স্থানীয় যাত্রীরা।
সময় বাঁচাল নতুন রুট, রইল না আর ট্রেন বদলের ঝামেলা
এই নতুন ট্রেনটি প্রতিদিন পুরুলিয়া থেকে দুপুর ১:৩০টা নাগাদ ছেড়ে সন্ধ্যার পরে, প্রায় ৯:৩০টা নাগাদ, হাওড়া স্টেশনে পৌঁছবে। দীর্ঘদিন ধরে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার যাত্রীদের হাওড়া পৌঁছাতে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল অতিরিক্ত পথ ও একাধিক স্টেশনে ট্রেন বদলের ঝামেলা। এই নতুন রুটে চলাচল করায় অন্তত ৫০ কিলোমিটার কম পথ অতিক্রম করতে হবে যাত্রীদের। আগে যেখানে বাঁকুড়া থেকে হাওড়া পৌঁছাতে ঘুরপথে যেতে হত খড়গপুর হয়ে, সেখানে এখন এই নতুন রুটটি তুলনামূলকভাবে সরাসরি এবং দ্রুতগামী। ফলে যাত্রার সময় যেমন কমবে, তেমনই আর ট্রেন বদলানোরও দরকার পড়বে না।
মসাগ্রামের নতুন পরিচয়: দুই রেলের সংযোগস্থল
মসাগ্রাম স্টেশন এই পরিষেবার ফলে হয়ে উঠেছে পূর্ব রেল ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন। আগে এমন সরাসরি যোগাযোগের অভাব ছিল, যার ফলে বহু যাত্রীকে কষ্ট করতে হতো গন্তব্যে পৌঁছাতে। নতুন এই ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক বড় পরিবর্তন ঘটল বলে মনে করছেন রেল আধিকারিকেরা। এই পরিষেবা ছাড়াও রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরও একটি নতুন লোকাল ট্রেন পরিষেবা আনা হচ্ছে বিষ্ণুপুর ও জয়রামবাটি রুটে। এই ট্রেন দিনে দু’বার চলবে—সকাল ও সন্ধ্যায়। কয়েক মাসের মধ্যেই এই রুটেও পরিষেবা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এখনও পুরো সময়সূচি প্রকাশ করা হয়নি। শিগগিরই তা জানানো হবে।
এলাকার মানুষের মুখে হাসি
স্থানীয় যাত্রীদের মতে, “এই রুটে একটানা ট্রেন চলাচলের অভাব ছিল বহুদিনের সমস্যা। এই মেমু ট্রেন চালু হওয়ায় আমরা রোজকার যাতায়াতে অনেকটাই স্বস্তি পাব।” নতুন মেমু লোকাল ট্রেনটি শুধুমাত্র একটি পরিবহন মাধ্যম নয়, বরং এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকেও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যমে শুধু যাত্রীদের সুবিধাই নয়, উন্নত হবে পণ্য পরিবহন, বাড়বে বাণিজ্যিক সম্ভাবনাও।