Sixth Pay Commission Report : রাজ্য সরকারি কর্মীদের বহু প্রতীক্ষিত ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট অবশেষে সামনে এল। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রকাশিত এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে—ডিএ প্রদান বা বাড়ানো রাজ্য সরকারের বাধ্যতামূলক নয়। বরং, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি বিচার করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার। রিপোর্ট অনুযায়ী, অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI)-এর অনুপাতে ডিএ বৃদ্ধি বাধ্যতামূলক নয় বলেই মত দিয়েছে কমিশন। ফলে, কেন্দ্রের নিয়ম অনুসরণ করে ডিএ না বাড়ালেও তা আইনত বৈধ হতে পারে বলে ব্যাখ্যা উঠে এসেছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, কেন্দ্রের মতোই রাজ্যও AICPI-র পরিসংখ্যান বিবেচনায় আনতে পারে, কিন্তু সেই সূচক বাধ্যতামূলক নির্দেশিকা নয়। বরং রাজ্যের নিজস্ব আর্থিক সক্ষমতা ও বাজেট কাঠামোর উপর ভিত্তি করেই ডিএ সংক্রান্ত নীতি নির্ধারিত হওয়া উচিত, এমন মত পেশ করেছে বেতন কমিশন।
আদালতের নির্দেশেই প্রকাশ
বিগত কয়েক বছর ধরে ডিএ সংক্রান্ত বিতর্ক এবং সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনের মাঝে এই রিপোর্ট গোপন রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। তবে কলকাতা হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশে এবার তা জনসমক্ষে আনা হয়। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, রাজ্য চাইলে বছরে একাধিকবার ডিএ রিভিউ করতে পারে, তবে সেটি নিয়ম নয়, নীতিগত বিষয়।
কর্মীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এই রিপোর্ট প্রকাশের পর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। একাংশ বলছেন, কমিশনের মতামত সরকারের সিদ্ধান্তে আইনি বৈধতা দিলেও, জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধির বাস্তবতা তাদের পাশে নেই। অন্যদিকে, রাজ্যের অর্থ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, রিপোর্ট যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কমিশনের সুপারিশের অন্যান্য দিক
-
ডিএ দেওয়া নিয়ে রাজ্যকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
-
রাজ্য সরকারের ব্যয়ভার না বাড়িয়ে পুনর্গঠন ও প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
-
কর্মীদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, প্রোমোশন এবং অবসরকালীন সুবিধা পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব রয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই ইস্যুতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, কেন্দ্র যেখানে নির্দিষ্ট সূচকের ভিত্তিতে ডিএ প্রদান করে, সেখানে রাজ্য সরকারের এই অবস্থান সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। তবে শাসক দলের বক্তব্য, “রাজ্যের আয় সীমিত। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই সময় মতো বেতন ও অন্যান্য ভাতা প্রদান করছে। এখন সম্পূর্ণ বাস্তবতা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”