মালদহের ইংরেজবাজার থানার অন্তর্গত বারোদুয়ারি এলাকায় রীতিমতো রুদ্ধশ্বাস খুন। রবিবার রাতে পরিবারের এক আত্মীয়ের বাড়িতে অন্নপ্রাশনের নিমন্ত্রণে যাচ্ছিলেন সুবল ঘোষ নামে এক তৃণমূল কর্মী। ঠিক তখনই তাঁকে একা পেয়ে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, আগে থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয় এলাকায়। আর সেই অন্ধকারেই ধারাল হাঁসুয়া হাতে সুবল ঘোষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একদল দুষ্কৃতী। রাস্তায় ফেলে নৃশংসভাবে কোপানো হয় তাঁকে।
সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হওয়াই কি মৃত্যুর কারণ?
পরিবারের দাবি, সুবল ঘোষ দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে এলাকায় সক্রিয়ভাবে কাজ করতেন, প্রচারেও যুক্ত ছিলেন। সেই কারণেই বিজেপি কর্মীদের মধ্যে তাঁর প্রতি রাগ ছিল। তাঁদেরই মদতে এই পরিকল্পিত খুন বলে সরাসরি অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
অভিযোগের তালিকায় উঠে এসেছে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ লালচান ঘোষ ও বাপি ঘোষ-সহ বেশ কয়েকজনের নাম। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত এক মহিলাকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে পুলিশ, বাকিরা পলাতক।
হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো গেল না সুবলকে
রক্তাক্ত অবস্থায় সুবল ঘোষকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খুনের ঘটনা ঘিরে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ঘটনাটি ঘটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের ঠিক আগেই, ফলে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও তৈরি হয়েছে চাপানউতোর।
তৃণমূল-বিজেপি মুখোমুখি, তদন্তে নামল পুলিশ
মালদহ জেলা তৃণমূল মুখপাত্র আশিষ কুন্ডু সাফ জানিয়েছেন, “সুবল ঘোষ আমাদের দলের একজন নিবেদিত কর্মী ছিলেন। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করেছে। আমরা দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে, বিজেপির দক্ষিণ মালদা জেলা সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় দাবি করেছেন, “এটা রাজনৈতিক নয়, বরং একটি পারিবারিক বিবাদের পরিণতি।” যদিও তাঁর কথায় এলাকায় তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরেই মালদহে তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। আবার একবার রাজনৈতিক হিংসার শিকার হতে হলো একজন তৃণমূল কর্মীকে। ভোট যত এগোচ্ছে, উত্তপ্ত হচ্ছে জেলার রাজনীতি—এটাই এখন চিন্তার কারণ সাধারণ মানুষের কাছে।