উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে রাজ্য পুলিশকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে বাইরের সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের চলাফেরা এবং তথ্য সংগ্রহের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বাংলা যেন কোনওভাবেই জঙ্গি কার্যকলাপের আস্তানা না হয়ে ওঠে।
‘বাইরের লোক ঢুকছে’, তথ্য নিয়ে যাচ্ছে তৃতীয় পক্ষ—চরম উদ্বেগ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি শুনছি, বাইরে থেকে অনেক লোক বাংলায় ঢুকছে। এমনকী আমাদের সমর্থকদের কাছ থেকেও ফোন নম্বর, প্যান কার্ড, নানা ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে তারা। পুলিশকে বলব, সতর্ক থাকুন। কোনও জঙ্গি যাতে বাংলায় ঢুকে আশ্রয় না পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।”এই মন্তব্যের মাধ্যমে রাজ্যে এক ধরনের নিরাপত্তা উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মমতা, যেখানে সীমান্ত পেরিয়ে অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে কেউ প্রবেশ করছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
‘সীমান্তে পুলিশ টহল দিচ্ছে না’—খোদ পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর
বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে সরাসরি উদ্দেশ করে মমতা বলেন, “আগে তো পুলিশ সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল দিত। এখন আর দেখা যায় না। শুধু বিএসএফ দেখলে হবে না, আইসি, ওসিরাও যদি চোখ-কান বুজে বসে থাকেন, তাহলে চলবে না।”উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “শীতলকুচিতে সম্প্রতি একজন কৃষককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলেন। উদয়ন গুহর কাছ থেকে খবর পেয়েই আমরা ব্যবস্থা নিই, তাঁকে ছাড়িয়ে আনি।”
‘ভুয়ো সমীক্ষার নামে তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে কিছু দল’—আরও এক গুরুতর অভিযোগ
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বিভিন্ন সমীক্ষার নাম করে গ্রুপে ভাগ হয়ে বাইরে থেকে লোকজন রাজ্যে ঢুকছে। মিথ্যা কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তথ্য আদায় করছে। আমি সবাইকে বলব, সরকারি আধিকারিক ছাড়া কাউকে কোনও তথ্য দেবেন না।”
তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে মালদা, কোচবিহার, ডায়মন্ডহারবার সহ একাধিক জায়গা থেকে এমন সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
‘প্রয়োজনে গ্রামে গ্রামে টহলদারি বাড়ান’—পুলিশকে কড়া নির্দেশ
ডিজির তরফে জানানো হয়, সীমান্তবর্তী একাধিক জেলায় এমন ঘটনা ঘটছে। মুখ্যমন্ত্রী সাফ নির্দেশ দেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে। গ্রামে গ্রামে বাড়াতে হবে টহলদারি।
বাংলায় নিরাপত্তা ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে যখন সীমান্ত এলাকা সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে, তখন বাইরের লোকজনের প্রবেশ এবং তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে তীব্র সতর্কতা তৈরি হয়েছে। মমতার কড়া বার্তা—বাংলায় জঙ কার্যকলাপ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।