সকালে ঘুম ভাঙতেই আতঙ্কে কেঁপে উঠল মেমারির একটি শান্ত পাড়া। বাড়ির সামনের রাস্তায় পড়ে ছিল রক্তাক্ত দুই দেহ। দম্পতির গলার নলি কাটা, চারপাশে ছড়ানো রক্ত। দেখে বোঝার উপায় ছিল না, এমন নৃশংসতা কে ঘটাতে পারে! এলাকাজুড়ে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা, শোক আর আতঙ্ক।
পরিচিত কেউই কি জড়িত?
মৃত প্রৌঢ় দম্পতির পরিচয় প্রকাশ্যে এলেও, কে বা কারা এই খুনের পিছনে রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান—পরিচিত কেউই এই হামলা চালিয়েছে। কারণ, দম্পতির বাড়ির সামনেই রাস্তায় এমন নির্মমভাবে দেহ ফেলে যাওয়ার সাহস অপরিচিতের মধ্যে সাধারণত দেখা যায় না।
দেহের পাশে রক্ত, ঘরে অদ্ভুত নিঃস্তব্ধতা
পুলিশ সূত্রে খবর, রাতের কোনও একসময়ে এই খুন হয়। আশপাশের কেউ কিছু টের পায়নি। শুধু ভোরের দিকে রাস্তায় পড়ে থাকা রক্ত দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তখনই দু’টি নিথর দেহ নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
তদন্তে নামল মেমারি থানার পুলিশ
খবর পেয়ে মেমারি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। দেহ দুটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। খুনের মোটিভ স্পষ্ট না হলেও তদন্তে গাফিলতি নেই বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকরা। পুলিশের একাংশ মনে করছে, ব্যক্তিগত শত্রুতা অথবা সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এমন খুন ঘটতে পারে।
সিসিটিভি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ
পুলিশ ইতিমধ্যে এলাকায় লাগানো সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি, প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদও শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, দম্পতির সঙ্গে সম্প্রতি কারও কোনও বিরোধ ছিল কিনা, সে বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
আতঙ্কে এলাকা, ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব স্থানীয়রা
এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকা জুড়ে শোকের আবহ। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ওই দম্পতি অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছিলেন, কারও সঙ্গে কোনও ঝামেলায় জড়াতেন না। কেউ কেউ বলছেন, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
মেমারির এই জোড়া খুন গোটা অঞ্চলে নাড়া দিয়ে দিয়েছে। পুলিশি তদন্তে অনেক তথ্য উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে একথা নিশ্চিত—এ ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পেছনে যে একজন কেবল অপরাধী নয়, বরং অমানবিক মনোভাব কাজ করে, তা আরও একবার প্রমাণিত হলো।