পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার অন্তর্গত ২ নম্বর নওগাঁ অঞ্চলের ফতেচক গ্রাম। গ্রামের শান্ত পরিবেশ আচমকা ভেঙে পড়ে রবিবার দুপুরে। একটি প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিখোঁজ দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীরা খোঁজ করতে থাকেন। পরে জানা যায়, স্থানীয় পাটখেতে সেই যুবতীকে এক ব্যক্তি জোর করে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে।
অভিযুক্ত কে? কীভাবে ধরা পড়ল?
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ব্যক্তির নাম শংকর কুমার পট্টনায়েক (বয়স ৪৩)। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শংকর আগে থেকেই মেয়েটিকে লক্ষ্য করছিল। রবিবার মেয়েটিকে একা পেয়ে পাটখেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে, তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
আদালতে তোলা ও পুলিশের পদক্ষেপ:
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে সোমবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে পেশ করা হয়। অভিযুক্তকে জেরা করে ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ফরেনসিক রিপোর্ট এবং মেডিকেল পরীক্ষার ভিত্তিতে চার্জশিট তৈরি করা হবে।
গ্রামের মানুষ কী বলছেন?
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা ফতেচক গ্রাম উত্তাল হয়ে ওঠে। প্রতিবন্ধী মেয়েটির পরিবারের পাশে দাঁড়ায় আশপাশের মানুষজন। স্থানীয় মহিলারা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাঁদের কথায়— “যদি এমন জঘন্য অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হয়, তবে মেয়েরা কোথাও নিরাপদ নয়।” বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক প্রবীণ বলেন, “প্রতিবন্ধী, নিরস্ত্র এক মেয়ের উপর এরকম পাশবিক আচরণ—এটা শুধু অপরাধ নয়, এটা মানবতার লজ্জা।”
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
এই ঘটনার পর প্রশাসন ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিবন্ধী ও নারীদের নিরাপত্তায় কতটা সচেতন স্থানীয় প্রশাসন, তা নিয়ে সরব হয়েছেন একাধিক মানবাধিকার কর্মী। স্থানীয় এক সমাজকর্মী বলেন, “শুধু গ্রেপ্তার করলেই চলবে না। বিচার যেন বিলম্বিত না হয়, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”
নীরব নয়, প্রতিবাদ করুন
এই ঘটনায় একটি বিষয় স্পষ্ট— সমাজের দুর্বলতম অংশ যখন এমন পাশবিকতার শিকার হন, তখন কেবল আইন নয়, সমাজের প্রতিও দায়বদ্ধতা তৈরি হয়। প্রতিবন্ধী নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে আরও বেশি সচেতনতা, প্রতিরোধ ও দ্রুত আইনি পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।