TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি ঘোষণা এখন সময়ের অপেক্ষা! শুল্ক বিরতির আগে হতে পারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তির খসড়া প্রায় চূড়ান্ত। গাড়ির যন্ত্রাংশ, ইস্পাত, কৃষিপণ্যের ইস্যুতে কিছু বিরোধ থাকলেও আলোচনায় অগ্রগতি। ৯ জুলাইয়ের আগেই ঘোষণা হতে পারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তরফে।

Debapriya Nandi Sarkar

ওয়াশিংটনের ওভাল অফিসে এখন চলছে ব্যস্ততম কূটনৈতিক তোড়জোড়। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত বাণিজ্যচুক্তির খসড়া প্রায় চূড়ান্ত। এই খবর জানিয়ে সোমবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, “চূড়ান্ত সমঝোতা হলেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে এই চুক্তির ঘোষণা করবেন।” ফলে আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক জল্পনা। কারণ, আগামী ৯ জুলাই শেষ হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে চলতি ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির মেয়াদ। এই চুক্তি না হলে ফের কার্যকর হতে পারে আগের কঠোর শুল্কনীতি। আর তার প্রভাব পড়বে বিলিয়ন ডলারের আমদানি-রফতানিতে। ফলে সময়সীমার মধ্যেই চুক্তি সম্পন্ন করার দিকে ঝুঁকছে দুই পক্ষই।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

কী কী নিয়ে বিরোধ?

চুক্তির কেন্দ্রে রয়েছে তিনটি মূল ইস্যু:

  • গাড়ির যন্ত্রাংশ

  • কৃষিপণ্য

  • এবং ইস্পাত আমদানি

এই তিনটি ক্ষেত্রেই দুই দেশের মধ্যে মতানৈক্য বিদ্যমান। আমেরিকা চায় ভারত কৃষিপণ্যের উপর থেকে শুল্ক ছাড় দিক এবং দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার আরও খুলে দিক। কিন্তু ভারতের আপত্তি মূলত এখানেই। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছেন, দেশের কৃষক ও দুগ্ধ উৎপাদকদের স্বার্থ রক্ষা করেই চুক্তির পথে হাঁটতে হবে। এই মুহূর্তে ভারতের বাজারে বিদেশি দুগ্ধজাত পণ্যের অনুপ্রবেশ দেশীয় উৎপাদকদের সমস্যায় ফেলতে পারে—এই আশঙ্কা থেকেই ভারতের অবস্থান কঠোর।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

ভারতের প্রতিনিধি দল কী বলছে?

এই অবস্থায় ওয়াশিংটনে উপস্থিত ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়াল, সঙ্গে রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। জয়শঙ্কর কোয়াড বৈঠকের পাশাপাশি এই বাণিজ্য আলোচনা সফল করতে মুখ্য ভূমিকা নিচ্ছেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষিতে আমেরিকার আগ্রহ যথেষ্ট। ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে বাণিজ্যচুক্তিকে দ্রুত চূড়ান্ত করতে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। তবে ভারতও কৌশলী অবস্থান নিচ্ছে, যাতে দেশের শিল্প ও কৃষি দুইয়ের ক্ষতি না হয়।

ট্রাম্প-মোদীর সম্পর্ক কতটা প্রভাব ফেলছে?

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র লেভিট বলেন, “ভারত আমাদের কৌশলগত অংশীদার, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই এই চুক্তিকে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।” এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, দুই নেতার ব্যক্তিগত রসায়ন কেবল রাজনৈতিক স্তরেই নয়, অর্থনৈতিক স্তরেও প্রভাব ফেলছে। মোদীর “মেক ইন ইন্ডিয়া” নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমেরিকার নিজস্ব ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ অ্যাজেন্ডা, যার সমন্বয় ঘটানো চ্যালেঞ্জ হলেও, সম্ভাবনার দরজা খুলছে।

সম্ভাব্য ফলাফল কী?

কূটনৈতিক মহলের ধারণা, ৮ জুলাইয়ের মধ্যে অন্তর্বর্তিকালীন কোনও ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তা না হয়, তবে ফের একবার শুল্কের বেড়াজালে আটকে পড়বে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক। সেই কারণে শেষ মুহূর্তের আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে, এই চুক্তি হলে তা হবে ট্রাম্পের জন্য নির্বাচনের আগে বড় সাফল্য এবং মোদীর জন্যও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারতের অবস্থান মজবুত করার সুযোগ।

বহুদিনের আলোচনার পর অবশেষে চুক্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ভারত ও আমেরিকা। এখন দেখার, শেষ মুহূর্তে কোনো আপত্তি উঠে আসে কিনা বা চুক্তির ঘোষণায় বাধা পড়ে কিনা। তবে এটা স্পষ্ট—এই চুক্তি শুধু দুই দেশের অর্থনীতি নয়, আন্তর্জাতিক কৌশলগত ভারসাম্যের দিকেও বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে।