TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

ডোভাল-ওয়াং বৈঠকের পরেই হঠাৎ নমনীয় চিন! কী বদল ঘটছে ভূরাজনীতিতে?

চিন অবশেষে স্বীকার করল ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা জটিল। আলোচনায় বসার বার্তা দিল বেজিং। ভারতের অবস্থান কী হতে পারে?

Debapriya Nandi Sarkar

একাধিক সংঘর্ষ, তীব্র উত্তেজনা, রক্তাক্ত পরিণতি— তবু আলোচনার দরজা বন্ধ করেনি দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী। অবশেষে ভারতের সঙ্গে চলমান সীমান্ত সমস্যাকে ‘জটিল’ বলে স্বীকার করল চিন। একই সঙ্গে জানাল, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চায় তারা। এই বার্তা সামনে আসতেই কূটনৈতিক মহলে নড়েচড়ে বসেছে দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

রাজনাথ-ডং বৈঠকের পরেই বদল চিনের সুর

চলতি বছরের ২৬ জুন, চিনের কুইংদাও শহরে অনুষ্ঠিত হয় শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO)-এর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠক। সেখানেই ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মুখোমুখি হন চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুন-এর। সেই আলোচনার পরই চিনের তরফে মন্তব্য আসে— “সীমান্ত সমস্যা সময়সাপেক্ষ, কিন্তু আমরা আলোচনায় আগ্রহী।” এর আগেও বহুবার চিন মুখে আলোচনার কথা বললেও, জটিলতা স্বীকার করে এমন স্পষ্ট স্বর এই প্রথম

চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র কী বললেন?

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, “ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা একদিনে মিটবে না। বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। তবে ইতিমধ্যেই দুই দেশের মধ্যে একাধিক স্তরে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। সেটাই ইতিবাচক দিক।” তিনি আরও বলেন, “আমরা রাজনৈতিক মানদণ্ড ও দিশানির্দেশ বিষয়ে একমত হয়েছি। আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় আগ্রহী চিন।”

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

Ajit Doval ও Wang Yi-র ঐতিহাসিক বৈঠক

২০২০ সালের লাদাখের গালওয়ান সংঘর্ষের পর, প্রথমবার ২০২৪-র ডিসেম্বরে SR (Special Representative) স্তরের বৈঠকে বসেছিলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সেই বৈঠকে বিচ্ছিন্নকরণ চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে উভয় দেশ ইতিবাচক মনোভাব দেখায়। এমনকি সেনা টহল ও স্থানীয়দের গবাদি পশু চরানোর অধিকার পুনর্বহাল হয়।

রাজনাথের বার্তা: বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরাতে হবে ‘গ্রাউন্ড অ্যাকশন’-এ

কুইংদাওয়ের বৈঠকে রাজনাথ সিং স্পষ্ট বলেন— “সীমান্তে বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। কথার চেয়ে বেশি প্রয়োজন কাজের। গ্রাউন্ড লেভেলে সঠিক পদক্ষেপই পারে আস্থা ফেরাতে।” এই মন্তব্যের পরেই চিন কিছুটা নমনীয় হয়ে আলোচনার আগ্রহ জানায়। তবে ভারত সরকারি ভাবে এখনও চিনের এই বক্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

চিন সময়সীমা বলছে না, ভারতের ভূমিকা এখন গুরুত্বপূর্ণ

চিনের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, “আমরা আশা করি ভারতও একই মনোভাবে এগোবে এবং যোগাযোগ চালিয়ে যাবে।” তবে কোন সময়ের মধ্যে সমস্যা মেটানো হবে, তা নিয়ে কোনও রূপরেখা দেননি তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, চিন কৌশলগতভাবে সময় টানতে চাইছে, অন্যদিকে ভারত চাইছে বাস্তবিক পদক্ষেপ।

পাকিস্তান ও অপারেশন ‘সিন্দুর’-এর প্রসঙ্গও ওঠে

বৈঠকে রাজনাথ সিং পাকিস্তান ঘাঁটি থেকে হওয়া পহেলগামের জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গও তোলেন। উল্লেখ করেন ভারতের গোপন সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিন্দুর’-এরও। এই পরোক্ষে হুঁশিয়ারি সম্ভবত চিনের জন্যই— তাদের বন্ধু পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে চাপ দেওয়ার কৌশলও হতে পারে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

ভারত-চিন সম্পর্ক: শান্তি না উত্তেজনা, কোন দিকে মোড় নেবে?

ভারত-চিন সম্পর্ক এক জটিল বন্ধন। দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৩,৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক বহুদিনের। গালওয়ান থেকে ডোকলাম, উত্তেজনার তালিকা দীর্ঘ। তবে এখন আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বেজিং। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এই বার্তা কি কেবল আন্তর্জাতিক মহলের কাছে এক ‘শান্তিপ্রিয়’ ছবি তুলে ধরার চেষ্টা, নাকি সত্যিই পরিবর্তনের ইঙ্গিত?